খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতাল চিকিৎসক সংকটে

খাগড়াছড়ি আধুনিক সদর হাসপাতালে চিকিৎসক ও লোকবল সংকট। রোগীদের পর্যাপ্ত সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসকদের। পাওয়া যাচ্ছে না প্রয়োজনীয় চিকিৎসাও। যেতে হচ্ছে জেলার বাইরে। এছাড়া খাগড়াছড়ি বাদেও রাঙ্গামাটির দুর্গম দুই উপজেলার মানুষের চিকিৎসাসেবাও দিতে হয় এই হাসপাতালে।

খাগড়াছড়ি আধুনিক হাসপাতালটি ১০০ শয্যা বিশিষ্ট। শুরুতে ৫০ শয্যার জন্য মঞ্জুর করা ২১ জন চিকিৎসক হলেও মূলত এখনও রয়েছেন ১২ জন। শূন্য পদ রয়েছে নয়টি। মাত্র ১২ জন চিকিৎসক দিয়ে চলছে ১০০ শয্যা বিশিষ্ট জেলা হাসপাতাল। ফলে সকল রোগীর কাছে সেবা পৌঁছতে বেগ পেতে হচ্ছে চিকিৎসকদের।

জেলার বিভিন্ন উপজেলার দুর্গম এলাকার অসহায় মানুষের একটু উন্নত চিকিৎসার একমাত্র ভরসা জেলা সদর হাসপাতাল। কিন্তু রোগীদের অভিযোগ- চিকিৎসক সংকট, এক্স-রে মেশিনসহ পরীক্ষা-নিরীক্ষার বিভিন্ন যন্ত্রপাতির অভাবে রয়েছে হাসপাতালটিতে। এছাড়া এক্স-রে মেশিন ডিজিটাল না হওয়ার কারণে প্রাইভেট হাসপাতালে বাইরে যেতে হচ্ছে রোগীদের। যা অনেক গরীব রোগীর জন্য সম্ভব হয়ে উঠে না।

হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা আব্দুল বারেক, লাইলী আক্তার, উমাচিং মারমা বাংলানিউজকে জানিয়েছেন, আগের চেয়ে হাসপাতালে সেবার মান বেড়েছে। তবে তা পর্যাপ্ত নয়। এক্স-রেসহ বেশ কিছু টেস্ট বাইরে থেকে করাতে হয়। একটু কিছু হলে আমাদের চট্টগ্রাম বা ঢাকায় চিকিৎসার জন্য যেতে হয়।

হাসপাতালের বহির্বিভাগে চিকিৎসা সেবা নেন দৈনিক ৫০০ রোগী। দিনে আভ্যন্তরীণভাবে ভর্তি হন গড়ে ৮০ জন রোগী। এসব রোগীদের সেবা নিশ্চিত করতে কঠিন হয়ে পড়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। অন্যদিকে, পরীক্ষা-নিরীক্ষায় যন্ত্রপাতি পরিচালনার জন্য দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণি পর্যায়ের লোকবল পর্যাপ্ত না থাকায় ব্যাহত হচ্ছে কার্যক্রম।

খাগড়াছড়ি আধুনিক সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. নয়ন ময় ত্রিপুরা বাংলানিউজকে বলেন, অল্প সংখ্যক চিকিৎসক দিয়ে রোগীদের চিকিৎসাসেবা দেওয়া আমাদের জন্য কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমাদের পর্যাপ্ত লোকবল না থাকার কারণে চিকিৎসা সংশ্লিষ্ট যন্ত্রপাতি চালাতে পারছি না। আমাদের আন্তরিকতা থাকলেও রোগীদের পর্যাপ্ত সেবা দিতে পারছি না।

খাগড়াছড়ির সিভিল সার্জন ডা. শাহ আলম বলেন, হাসপাতালে শূন্য পদে চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া খুব জরুরি হয়ে পড়েছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আশা করি চিকিৎসকসহ জনবল নিয়োগে কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেবে।

চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত ও সেবার মান বাড়াতে প্রয়োজনীয় চাহিদা অনুযায়ী চিকিৎসক ও উন্নত পরীক্ষাগার বাড়ানো হলেই পার্বত্য এলাকার মানুষ এ বিষয়ে শান্তি পাবে- এমনটাই বলছেন সংশ্লিষ্টরা।

About Post Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *