কাশির সঙ্গে অল্প বা বেশি যে পরিমাণ রক্তই যাক না কেন তার সঠিক ইতিহাস এবং অন্তর্নিহিত কারণ বের করা জরুরি। ব্রঙ্কাইটিস, ফুসফুস ক্যান্সার, ব্রঙ্কিয়াকটেসিস, যক্ষ্ণা, ফুসফুসে ফোড়া বা অ্যাবসেস, পালমোনারি এম্বলিজমসহ বিভিন্ন কারণে কফের সঙ্গে রক্ত যেতে পারে। বয়স ৪০-এর বেশি ও দীর্ঘদিনের কাশি, মাঝে মধ্যে হালকা রক্ত যাওয়া, দীর্ঘদিন ধূমপান, অল্প পরিমাণ শ্নেষ্ফ্মাযুক্ত কাশি এবং আপনাআপনি রক্ত পড়া বন্ধ হয়ে যাওয়ার ইতিহাস থাকলে ক্রনিক ব্রঙ্কাইটিস বলে সন্দেহ করা হয়। খুব বেশি জ্বর, কাঁপুনি দিয়ে জ্বর, সঙ্গে বুকে ব্যথা, কাশির সঙ্গে মরিচা রঙের কফ হলে নিউমোনিয়া হয়েছে বলে সন্দেহ করা হয়। কাঁপুনি দিয়ে জ্বর, রক্ত ও দুর্গন্ধযুক্ত কাশি হলে ফুসফুসে ফোড়া হয়েছে সন্দেহ করা হয়।
ধূমপানের দীর্ঘদিনের ইতিহাস, শুকনো কাশি, হঠাৎ কাশির প্রকৃতি পরিবর্তন, কদ্ধমাগত বেশি রক্ত যাওয়া, শিল্প-কারখানায় কাজের ইতিহাস থাকলে ফুসফুসে ক্যান্সার সন্দেহ করা হয়। দীর্ঘদিনের কাশি, সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর প্রচুর কফ, সঙ্গে রক্ত যাওয়া, আগে ফুসফুসে প্রদাহ বা যক্ষ্ণার ইতিহাস, শ্বাসনালিতে কোনো বস্তু বা ফরেন বডি (শিমের বিচি, পুঁতির দানা, পয়সা ইত্যাদি) আটকে যাওয়ার ঘটনা থাকলে রক্ত যাওয়ার কারণ হতে পারে ব্রঙ্কিয়াকটেসিস। অল্প জ্বর যা বিকেলের দিকে আসে, রাতে গা ঘেমে যায়, খাবারে অরুচি, ধীরে ধীরে ওজন কমে যাওয়া, ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় বসবাস, যক্ষ্ণা রোগীর সঙ্গে থাকা, এক কক্ষে গাদাগাদি করে থাকার বিষয় থাকলে রক্ত যাওয়ার কারণ যক্ষ্ণা হতে পারে। হঠাৎ করে কাশির সঙ্গে রক্ত আসা, বুকে ব্যথা, শ্বাসকষ্ট হলে পালমোনারি এম্বলিজম সন্দেহ করা হয়। এছাড়া অন্যান্য কারণেও কাশির সঙ্গে রক্ত যেতে পারে। রক্তের বিভিন্ন ধরনের রোগের কারণেও কফের সঙ্গে রক্ত যেতে পারে। যেমন-হেমোফিলিয়া। ওষুধের কারণে যেমন-ওয়ারফেরিন, ব্যথানাশক ওষুধ সেবন অন্যতম কারণ। কাশির সঙ্গে রক্ত গেলে তা নাক-কান ও গলার কোনো কারণেও যেতে পারে। আবার অনেক সময় গলা খাকারি দিলেও রক্ত আসতে পারে। এ ছাড়া নাক দিয়ে রক্ত আসা, গলা ফ্যাসফ্যাস হয়ে যাওয়া, মুখে ঘা ইত্যাদি উপসর্গ থাকলে সাধারণত শ্বাসনালির ওপরের অংশের কোনো রোগের কারণে রক্ত আসতে পারে। তবে যে কোনো সমস্যা দেখা দিলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা নিন, ভালো থাকুন।