বর্তমান টেকনোলজি বা প্রযুক্তি ব্যবসা, শিক্ষা স্তর বা বৈজ্ঞানিক আবিস্কারের মান উন্নত করার পাশাপাশি স্বাস্থ্য ক্ষেত্রেও এর অবদান অপরিহার্য। উন্নত প্রযুক্তি স্বাস্থ্যসেবায় বিশ্বব্যাপী অগণিত মানুষের জীবন বাঁচিয়ে তুলেছে এবং জীবনের গুনগত মান উন্নত করে তুলেছে।
স্বাস্থ্য সেবায় প্রযুক্তি শুধুমাত্র রোগী বা তাদের পরিবারের অভিজ্ঞতা পরিবর্তন করেনি। উপরন্তু তার পাশাপাশি চিকিৎসার পক্রিয়া এবং স্বাস্থ্যসেবা পেশাদারদের চর্চার উপর ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে।
এক্স- রে মেশিন থেকে সার্জারি, প্রযুক্তি আমাদের স্বাস্থ্যসম্মত এবং জীবনে প্রত্যাশার বৃদ্ধি ঘটিয়েছে। ২১ তম শতাব্দীতে আমরা আরও অগ্রসর হবো। এমন প্রযুক্তি বিকাশ চালিয়ে যাচ্ছি যা অসুস্থতাগুলি সমাধান করবে এবং আমাদের জীবনের মান উন্নত করবে। চলুন দেখে নিই স্বাস্থ্য সেবায় প্রযুক্তি বা টেকনোলজি অবদান-
চিকিৎসা ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যসেবা প্রযুক্তির অবদান
উন্নত চিকিৎসা প্রযুক্তিটি চিকিৎসকদের, আরও ভালোভাবে রোগীদের চিকিৎসা করার এবং পেশাদারদের অনশীলন করার সুযোগ দেয়।
• চিকিৎসা ও প্রযুক্তিঃ
আজকের পৃথিবীতে প্রযুক্তি প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি আমাদের ব্যক্তিগত জীবনেও গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করছে। সব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে চিকিৎসা ক্ষেত্রেও প্রযুক্তির দান অপরিহার্য।
চিকিৎসা প্রযুক্তি একটি বিস্তীর্ণ ক্ষেত্র। যেখানে বায়োটেকনোলজি, ফার্মাসিউটিক্যালস, তথ্য প্রযুক্তি, উন্নয়ন চিকিৎসার সাজসরঞ্জামগুলি সারা বিশ্বের মানুষের স্বাস্থ্যের উন্নতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে।
স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান যে চিকিৎসা প্রযুক্তির উপর নির্ভর করে তা অস্বীকার করা যায় না। স্বাস্থ্যসেবা অনুশীলনকারীদের রোগ নির্ণয়, সার্জারি প্রক্রিয়া , রোগীদের যত্ন থেকে অনুশীলন আরও উন্নত করার উপায় তাদের খুঁজে বার করতে হবে।
• স্বাস্থ্য সেবায় তথ্য প্রযুক্তিঃ
তথ্য প্রযুক্তির আমাদের বিশ্বে সার্থক অবদান রয়েছে। যেমন- চিকিৎসা ক্ষেত্রে। এই তথ্য প্রযুক্তিগুলি ইলেকট্রনিক মেডিক্যাল রেকর্ড, টেলিহেলথ সার্ভিস, মোবাইল টেকনোলজি ( যেমন – ট্যাবলেট, স্মার্ট ফোন ইত্যাদি ) ব্যবহার বৃদ্ধি করেছে। দিনের পর দিন চিকিৎসক ও রোগীদের জন্য মেডিক্যাল টেকনোলজি আরও সুবিধা আনছে।
1. টেলিযোগাযোগঃ-
হাজার হাজার মাইল দূর থেকে টেলিযোগাযোগের মাধ্যমে রোগীদের সঙ্গে ডাক্তারদের সংযোগ স্থাপন করে তোলে প্রযুক্তি। চিকিৎসকের সঙ্গে রোগীদের ভিডিও কনফারেন্সে কথা বলে সমস্যা সমাধান করা , আজকের পৃথিবীতে অস্বাভাবিক ঘটনা নয়। এতে সময় অপচয় কম হয় বা এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় গিয়ে চিকিৎসা করানোর জন্য টাকা খরচও কম হয়। স্বাস্থ্য সেবার প্রযুক্তি মাধ্যমে বিশ্বের যে কোন স্থানে বিশেষজ্ঞ বা ডাক্তারকে দ্রুত স্বাস্থ্য তথ্য পাঠানো সম্ভব।
2. মোবাইল ডিভাইসঃ-
সেকেন্ডের মধ্যে চিকিৎসা প্রযুক্তির ( যেমন – মোবাইল ) মাধ্যমে তাদের কাজ সম্পাদন করতে পারে। চিকিৎসকরা এখন মুহূর্তের মধ্যে তাদের প্রয়োজনীয় তথ্য অ্যাক্সেস করতে পারেন। যেমন – ড্রাগ ইনফরমেশন, গবেষণা সম্বন্ধিত তথ্য, রোগীদের তথ্যের রেকর্ড ইত্যাদি।
মোবাইল ডিভাইস প্রযুক্তির মাধ্যমে চিকিৎসকরা তাদের যে কোন প্রয়োজনীয় তথ্য বিশ্বের যে কোন স্থানে বহন করে নিয়ে যেতে পারে।
• প্রযুক্তি ও চিকিৎসা গবেষণাঃ
চিকিৎসক এবং চিকিৎসা গবেষণা রোগ নির্ণয় ও রোগ নিরাময়ের পাশাপাশি নতুনত্ব ঔষধ তৈরিতে অনবরত পরীক্ষা করে চলেছে।
চিকিৎসা গবেষণা প্রযুক্তি ব্যবহার করে, বিজ্ঞানীরা সেলুলার স্তরে রোগ নির্ণয় এবং রোগের বিরুদ্ধে অ্যান্টিবডি উৎপাদনে সক্ষম হচ্ছে। স্বাস্থ্য সেবায় প্রযুক্তি ম্যালেরিয়া, পোলিও, এম এম আর মতো জীবন বিপন্ন রোগগুলি বিরুদ্ধে টিকা আবিষ্কার করে বিশ্বজুড়ে হাজার হাজার মানুষের প্রান বাঁচায়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা গণনা করে দেখেছে, প্রতি বছর এই টিকাগুলি প্রায় ৩ মিলিয়নের বেশি প্রাণ বাঁচায় এবং লাখ লাখ মানুষকে মারাত্মক ভাইরাস রোগের সংক্রমণের হাত থেকে বাঁচায়।
• চিকিৎসা প্রযুক্তির সরঞ্জামঃ
জীবনের মান উন্নত করার একটি সুবিধা হল চিকিৎসা বিজ্ঞানে নতুন মাত্রা আনা। সার্জারি, ভালো নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা এবং আরামদায়ক স্ক্যানিং সাজসরঞ্জামগুলি তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠতে ও সুস্থ জীবন উপভোগ করতে সুযোগ দেয়।
চিকিৎসা সাজসরঞ্জাম প্রযুক্তি এবং টেলিহেলথ রোবোটিক সার্জারি সৃষ্টি করছে, যেখানে কিছু কেসে সার্জারি চলার সময় চিকিৎসককে রোগীর সঙ্গে অপারেটিং রুমে থাকার প্রয়োজন হবে না। তার পরিবর্তে সার্জন তাদের ‘ হোম বেস ‘ থেকে কাজ করতে পারে এবং রোগীরা তাদের নিজস্ব শহরের কাছাকাছি যে কোন হাসপাতাল বা ক্লিনিকে কার্যপ্রণালী সম্পাদন করতে পারে।