প্রদাহবিরোধী এ সবজিতে থাকা বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন ও খনিজ উপাদান শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে। বিভিন্ন গবেষণা ও পুষ্টিবিজ্ঞানীদের মতামতে উঠে এসেছে ফুলকপির স্বাস্থ্যগুণ।
পুষ্টিতে ভরপুর
এক কাপ কাঁচা ফুলকপি আপনার শরীরের দৈনিক ভিটামিন সির চাহিদার ৭৫ শতাংশ পূরণ করে। এটা ডিএনএ মেরামত, কোলাজেন ও সেরোটোনিন উৎপাদনে ভূমিকা রাখে। আর সেরোটোনিন সুখ ও ভালো ঘুমে সহায়তা করে। এক কাপ ফুলকপি দৈনিক ভিটামিন কে-এর চাহিদার ২০ শতাংশ পূরণ করে, যা আমাদের হাড় গঠন ও ভেঙে যাওয়া থেকে রক্ষা করে। এছাড়া ফুলকপিতে থাকা পুষ্টি উপাদান ঘুম, স্মৃতিশক্তি, কোনো বিষয় শেখা এবং পেশি মুভমেন্টে ভূমিকা রাখে। ফুলকপি প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি, আয়রন, ফসফরাস, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ও ম্যাঙ্গানিজসহ শরীরের প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান সরবরাহ করে।
প্রদাহবিরোধী
ফুলকপির মধ্যে পাওয়া যৌগগুলো প্রদাহবিরোধী ভূমিকার জন্য পরিচিত। অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ এ সবজি মানসিক চাপ প্রতিরোধে ভূমিকা পালন করে। মানসিক চাপের সময় কোষ ক্ষতিকারক পদার্থ উৎপাদন করে, ফলে শরীরে ভারসাম্যহীনতার সৃষ্টি হয়। এটার বিরুদ্ধে কাজ করে ফুলকপির এ পুষ্টি উপাদান।
দুই ঘাতকের বিরুদ্ধে কাজ করে
ফুলকপি ক্রুসিফেরাস সবজি পরিবারের সদস্য, যার মধ্যে আছে ব্রাসেলস স্প্রাউট, ক্যাল, ব্রোকলি, বাঁধাকপি, কলার্ড গ্রিনস ও বোক চয়ে। এ সবজি পৃথিবীর সবচেয়ে বড় দুই ঘাতক ক্যান্সার ও হূদরোগের ঝুঁকি হ্রাস করতে সহায়তা করে। ক্রুসিফেরাস সবজিতে এমন কিছু প্রাকৃতিক পদার্থ থাকে, যা রক্তনালিগুলোর বাঁক ও শাখাগুলোকে সুরক্ষা দেয়। ফুলকপি ও অন্যান্য ক্রুসিফেরাস জাতীয় সবজিতে থাকা উপাদানগুলো ক্যান্সার সৃষ্টিকারী পদার্থকে অক্ষম করে এবং ক্যান্সারের বৃদ্ধি ও ছড়িয়ে পড়া রোধ করে।
বার্ধক্যের বিরুদ্ধে লড়াই করে
কয়েকটি গবেষণায় দেখা গেছে, ফুলকপির প্রাকৃতিক উপাদান যেমন সালফেরাফেন জিনগুলোকে এমনভাবে প্রভাবিত করতে পারে, যা বার্ধক্যের জৈব রাসায়নিক প্রক্রিয়াকে ধীর করে দেয়। ফুলকপির যৌগগুলো মস্তিষ্ক ও স্নায়ুতন্ত্রের প্রক্রিয়াকে রক্ষা করে এবং বয়স বৃদ্ধি প্রক্রিয়াকে হ্রাস করে।
স্বাস্থ্যকর ওজন হ্রাসে ভূমিকা রাখে
ফুলকপি ফাইবারের পূর্ণতা বাড়াতে, ক্ষুধা ফিরে আসতে বিলম্ব করে এবং রক্তে শর্করা ও ইন্স্যুলিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে স্বাস্থ্যকর ওজন হ্রাসে সহায়তা করে। এক কাপ কাঁচা ফুলকপি ৩ দশমিক ৫ আউন্স পানি সরবরাহ করে, যা খাওয়ার তৃপ্তিকে উন্নীত করে। সাদা ভাতের পরিবর্তে ফুলকপি খেলে ক্যালরি ও কার্বোহাইড্রেটগুলো স্থানচ্যুত হয়ে শরীরের ওজন কমিয়ে আনবে।
আপাতদৃষ্টিতে ফুলকপি খাওয়ার অনেক ধরনের উপায় আছে। বিভিন্ন তরকারির সঙ্গে বা আলাদাভাবে ফুলকপি রান্না করা যায়। সাদা ছাড়াও এ সবজি প্রাকৃতিকভাবে বেগুনি, কমলা ও সবুজ জাতের পাওয়া যায়। যদি আপনি সাহসী হন, তবে ব্রাউনিজ, কেক, পুডিং ও পনিরের মতো অনলাইনে পাওয়া মিষ্টিজাতীয় রেসিপিগুলোর সঙ্গেও ফুলকপি যুক্ত করতে পারেন।