সুবিধাবঞ্চিতদের স্বাস্থ্য সহায়তায় আহছানিয়া মিশন স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফোরাম

দেশের সুবিধাবঞ্চিত মানুষের সার্বজনীন স্বাস্থ্য সহায়তার জন্য ঢাকা আহছানিয়া মিশনের স্বাস্থ্য সেক্টরের আওতায় যাত্রা শুরু করেছে আহছানিয়া মিশন স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফোরাম। রবিবার রাজধানীর ধানমন্ডিতে অবস্থিত ঢাকা আহছানিয়া মিশন মিলনায়তনে ফোরামের শুভ উদ্বোধন উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি সাবের হোসেন চৌধুরী এমপি বলেন, ‘সুবিধাবঞ্চিত মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় বিদেশী আর্থিক নির্ভরতা কমিয়ে স্থানীয়ভাবে তহবিল সংগ্রহের উদ্যোগ প্রশংসনীয়। দেশের মানুষের সেবাকে এগিয়ে নিতে ও টেকসই করতে এই ফোরাম উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে বলে আমি মনে করি।’

স্বাগত বক্তব্যে মিশনের স্বাস্থ্য সেক্টরের পরিচালক ইকবাল মাসুদ বলেন, ‘এই ফোরামের অন্যতম লক্ষ্য হচ্ছে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের স্বাস্থ্যসেবায় স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়া এবং টেকসই স্বাস্থ্য ব্যবস্থার মাধ্যমে দেশের দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষ স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ভূমিকা রাখা।’

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার উদ্বৃতি দিয়ে তিনি জানান, স্বাস্থ্য ব্যয় মেটাতে গিয়ে বাংলাদেশে প্রতিবছর সাড়ে ৫২ লাখ মানুষ দরিদ্র হয়ে পড়ছে। অন্যদিকে পারিবারিক ব্যয়ের ১০ শতাংশের বেশি স্বাস্থ্য ব্যয়ই হচ্ছে আকস্মিক স্বাস্থ্যব্যয়। একারণে বাংলাদেশের ১৪ দশমিক ১ শতাংশ মানুষ প্রতিবছর যথোপযুক্ত স্বাস্থ্যসেবা পাচ্ছেনা।

এছাড়া জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও)-র প্রতিবেদন উল্লেখ করে তিনি বলেন, স্বাধীনতার পর দেশের প্রধান খাদ্যশস্যের উৎপাদন বেড়েছে তিন থেকে পাঁচ গুণ। তারপরেও গতবছর দেশে অপুষ্টিতে ভোগা মানুষের সংখ্যা বেড়েছে চার লাখ। এখনও দেশের অর্ধেক গর্ভবতী নারী রক্তশূন্যতায় ভোগেন।

ইকবাল মাসুদ আরও বলেন, বর্তমানে দেশে শহর-গ্রাম যেখানেই হোক, দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষ স্বাস্থ্যসেবা পাওয়ার ক্ষেত্রে পিছিয়ে আছে। তাই পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্য সুরক্ষায় দরকার দেশের সর্বস্তরের মানুষের সহায়তা। সরকারের পাশাপশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে ঢাকা আহছানিয়া মিশন দেশের সুবিধাবঞ্চিত মানুষের স্বাস্থ্যসেবায় কাজ করে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সমর্থ্যবান ব্যক্তি দেশের স্বাস্থ্যসেবামূলক কাজকে আরো সম্প্রসারিত ও টেকসই করতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে পারে।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন লায়ন্স ক্লাব ইন্টারন্যাশনালের সেকেন্ড সেঞ্চুরী অ্যাম্বাসেডর লায়ন অধ্যাপক ডা: এম ফখরুল ইসলাম, পিএমজেএফ । এছাড়া প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক জেলা গর্ভনর, লায়ন্স ক্লাব ইন্টারন্যাশনাল ( জেলা ৩১৫ এ২) লায়ন শেখ আনিসুর রহমান. পিএমজেএফ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের সভাপতি কাজী রফিকুল আলম।

উল্লেখ্য যে, রবিবার ৮১ জন সদস্য নিয়ে আহছানিয়া মিশন স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফোরাম যাত্রা শুরু করে। কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান নিয়মিত বা এককালিন আর্থিক অনুদান দিয়ে এই ফোরামের নিয়মিত সদস্য, জীবন সদস্য অথবা পেট্রোন হতে পারবে। এই ফোরামের কার্যক্রম ও আর্থিক ব্যবস্থাপনার জন্য ১১ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি থাকবে।

About Post Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *