যক্ষ্মা চিকিৎসায় ‘বিপ্লব’ আনবে নতুন ভ্যাকসিন

যক্ষ্মা সারাতে নতুন ভ্যাকসিন আবিষ্কার করেছেন বিজ্ঞানীরা। নতুন এই ওষুধটি চিকিৎসা ক্ষেত্রে বিপ্লব সৃষ্টি করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) ভারতের হায়দ্রাবাদে ফুসফুস স্বাস্থ্য বিষয়ে এক বিশ্ব সম্মেলনে নতুন ভ্যাকসিন আবিষ্কারের কথা জানানো হয়। 

প্রতিবছর বিশ্বে অন্তত এক কোটি মানুষ যক্ষ্মায় আক্রান্ত হন। এদের মধ্যে মারা যান প্রায় ১৫ লাখ মানুষ। আশা করা হচ্ছে, নতুন ভ্যাকসিন দীর্ঘ সময় ধরে সুরক্ষা দেবে এই রোগের বিরুদ্ধে। 

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, যক্ষ্মা সারাতে এখন ‘বিসিজি’ ভ্যাকসিন দেওয়া হয়, যা খুব বেশি কার্যকরী নয়। সেক্ষেত্রে নতুন ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা প্রমাণিত হলেও এর লাইসেন্স পেতে ও বাজারে সহজলভ্য হতে বেশ কয়েক বছর সময় লাগবে।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানীদের সমন্বয়ে গঠিত একটি দল যক্ষ্মার নতুন ভ্যাকসিনটি আবিষ্কার করেন। এটি যক্ষ্মার প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করতে সক্ষম এমন একটি ব্যাকটেরিয়ার প্রোটিন থেকে তৈরি করা হয়েছে।  

এ পর্যন্ত তিন হাজার পাঁচশ’ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের ওপর নতুন ভ্যাকসিন পরীক্ষা করা হয়েছে। প্রাথমিক পরীক্ষায় পাস করে গেছে এটি। দক্ষিণ আফ্রিকা, কেনিয়া ও জাম্বিয়ার মতো যক্ষ্মার প্রাদুর্ভাব বেশি এমন দেশের বাসিন্দাদের ওপর এই পরীক্ষা করা হয়।  

যক্ষ্মা বিশেষজ্ঞ ডেভিড লেওয়িনসন বলেন, সম্ভাবনাময় এই ভ্যাকসিনটি সবকিছু বদলে দেবে। এটা ইতোমধ্যে যক্ষ্মার জীবাণু আক্রান্তদের ক্ষেত্রে কাজ করেছে। তবে, যক্ষ্মার জীবাণু অর্থাৎ মাইক্রোব্যাকটেরিয়াম টিউবারক্যুলাসিস আক্রান্ত সবারই যক্ষ্মা হয় না। তার মানে সম্ভাবনা রয়েছে, এই ব্যাকটেরিয়া কারও কারও রোগ প্রতিরোধের সুযোগ তৈরি করে দেয়। এটা দারুণ যে, নতুন ভ্যাকসিনটি প্রাকৃতিক প্রতিরোধক বাড়াতে সাহায্য করবে। 

তবে, বাজারে ছাড়ার আগে এটি আরও বেশি মানুষের ওপর পরীক্ষা করে দেখতে হবে। যদি প্রাথমিকভাবে পরীক্ষামূলক ফলাফলের মতোই ভালো ফল পাওয়া যায়, তবে এটা যক্ষ্মা চিকিৎসায় বিপ্লব ঘটাবে। 

ডেভিড জানান, সব ঠিক থাকলেও এটি বাজারে আসতে আসতে ২০২৮ সাল পর্যন্ত সময় লাগবে। 

যক্ষ্মার প্রাদুর্ভাব সবচেয়ে বেশি ভারতে। সেখানে প্রতিবছর ২৮ লাখ মানুষ যক্ষ্মায় আক্রান্ত হন। এর মধ্যে মারা যান চার লাখ মানুষ। এরপরেই রয়েছে যথাক্রমে চীন, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন, পাকিস্তান, নাইজেরিয়া, বাংলাদেশ ও দক্ষিণ আফ্রিকা। বিশ্বের যক্ষ্মা আক্রান্তদের দুই তৃতীয়াংশ এই আটটি দেশের বাসিন্দা। 

About Post Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *