অনেককেই উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত ওষুধ খেতে হয়। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী, একেকজন একেক সময়ে এ ওষুধ খান। সাম্প্রতিক এক গবেষণা বলছে, প্রতিদিনের উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ যদি রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে খাওয়া হয় তাহলে সেটি বেশি কার্যকর হয়।
ইউরোপীয় হার্ট জার্নালে এ নিয়ে একটি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে।
গবেষকরা বলছেন, সকালের বদলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের ওষুধ যদি রাতে ঘুমাতে যাবার আগে খাওয়া হয় তবে তা হৃদরোগ বা স্ট্রোক থেকে বেশি সুরক্ষা দিতে পারে।
উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ কোন সময়ে গ্রহণ করলে বেশি কার্যকর হয় তা নিয়ে স্প্যানিশ ওই গবেষণায় ১৯ হাজার রোগীর ওপর সমীক্ষা চালানো হয়।
গবেষকরা সকালে এবং রাতে ঘুমানোর আগে ওষুধ গ্রহণকারীদের ওপর পরীক্ষা চালান।
গবেষণায় দেখা যায়, রাতে ওষুধ গ্রহণকারীদের মৃত্যু বা হৃদরোগের হার বা ঝুঁকি অন্যদের তুলনায় প্রায় অর্ধেক কমেছে। কারণ,রাতে ঘুমানো বা বিশ্রাম গ্রহণের কারণে রক্তচাপ কমে যায়।
বিষয়টির বিপরীত ব্যাপার ঘটছে সকালে ওষুধ খাওয়া রোগীদের ক্ষেত্রে।
তবে বিশেষজ্ঞরা এটাও বলছেন, কারও রক্তচাপ যদি সবসময়ই বেশি থাকে তবে হৃদরোগ বা স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।
গবেষণার শীর্ষ গবেষক স্পেনের ভিগো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রেমন হার্মিদা বলেন,, চিকিৎসকরা রোগীদের পরিস্থিতি বিবেচনা করেই ওষুধ গ্রহণে পরামর্শ দিতে পারেন। তার মতে, এটি যেমন চিকিৎসার পেছনে বাড়তি ব্যয় হ্রাস করবে, সেই সঙ্গে বহু প্রাণও বাঁচাবে।
তিনি জানান, বিভিন্ন স্থানের মানুষের ওপর ভিন্ন ভিন্ন মাত্রার ব্র্যান্ডের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের ওষুধ একইভাবে কাজ করে কিনা তার জন্যে আরও পরীক্ষা নিরীক্ষার প্রয়োজন।
ব্রিটিশ হার্ট ফাউন্ডেশনের ভেনেসা স্মিথ বলেছেন, ‘এ গবেষণাটি এ অঞ্চলে চালানো পূর্ববর্তী গবেষণার ফলাফলকে সমর্থন করছে। তবে সামগ্রিক ফল পেতে ভিন্ন জাতি গোষ্ঠীর মানুষের ওপর বা যারা বিভিন্ন সময়ভিত্তিক কাজ করেন তাদের ওপর এটি চালিয়ে দেখা উচিত।’ তার মতে, সবার ওপর গবেষণা হলে তবেই সঠিকভাবে প্রমাণ করা যাবে রাতে গ্রহণ করা উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ সবার ক্ষেত্রে হৃদযন্ত্রের জন্য উপকারী কিনা।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুধু ওষুধ নয়, মানুষের জীবন যাপন পদ্ধতিও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। এ ব্যাপারে কিছু বিষয় খেয়াল রাখা জরুরি। যেমন-
১. অতিরিক্ত মদ্যপান এড়িয়ে চলা
২. ধূমপান না করা
৩. অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতা নিয়ন্ত্রণ
৪. নিয়মিত সঠিক মাত্রায় ব্যায়াম করা
৫. অতিরিক্ত লবণ খাওয়া থেকে বিরত থাকা । সূত্র : বিবিসি