পেপ টেস্ট কী ও কেন

 পেপ টেস্ট কী?
পেপ টেস্টের মাধ্যমে জরায়ু মুখের কোষ নিয়ে পরীক্ষা করা হয়। এ পরীক্ষায় কোষের এমন কিছু পরিবর্তন লক্ষ করা হয় যা ধীরে ধীরে ক্যান্সারে রূপ নিতে পারে।

 কখন এ পরীক্ষাটি করতে হবে?
জরায়ুতে কোনো ধরনের সমস্যা থাকলেই এ পরীক্ষাটি করতে হবে, তা কিন্তু নয়। তবে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে ২৫ থেকে ৬৫ বছর পর্যন্ত প্রতিটি মহিলার প্রতি তিন বছর পর পর এ পরীক্ষাটি করা উচিত। যদি পেপ টেস্টের সাথে HPV-DNA টেস্ট নর্মাল থাকে তবে প্রতি পাঁচ বছর পর পর এ টেস্টটি করা যাবে। তাছাড়া গর্ভাবস্থায়ও এ পরীক্ষাটি করা যায়।

 কিভাবে পরীক্ষাটি করা হয়?
এ পরীক্ষার জন্য চামচের মতো একটি যন্ত্র মাসিকের রাস্তায় দিয়ে ব্রাশ এবং কাঠির সাহায্যে জরায়ু মুখ থাকে কোষ নিয়ে পরীক্ষার জন্য পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়। এতে আপনি তেমন ব্যথা পাবেন না, তবে সামান্য অস্বস্তি লাগতে পারে।

 ফলাফল অস্বাভাবিক হলে কী করতে হবে?
এ পরীক্ষার ফলাফলে যদি কোষের আস্বাভাবিক কোনো লক্ষণ ধরা পরে, তবে ভয় পাবেন না। কারণ কোষের অস্বাভাবিকত্ব থাকা মানেই সাধারণভাবে ক্যান্সারের নিশ্চিত উপস্থিতি বোঝায় না। অনেক সময় জরায়ুতে জীবাণুর সংক্রমণ বা প্রদাহ থেকেও অস্বাভাবিক ফলাফল হতে পারে। তবে সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে সংগৃহীত কোষের পরিমাণ কম থাকলে এটি পুনরায় করার দরকার হতে পারে। তবে পরীক্ষার ফলাফলে CIN বা ক্যান্সারের পূর্বাবস্থা দেখা গেলে আপনাকে কল্পস্কপি ও বায়পসি করার জন্য পাঠানো হতে পারে। বায়পসি রেজাল্টের পর অথবা অনেক সময় কল্পস্কপি করা অবস্থাতেই চিকিৎসা করা হয়। এর বিভিন্ন চিকিৎসা পদ্ধতিগুলো হচ্ছে লীপ, কোল্ড কোয়াগুলেসন, কটারি ও লেজার। এ চিকিৎসার পরও ডাক্তারের তত্ত্বাবধানে নিয়মিত ফলোআপ করে যেতে হবে।

 এর কোনো বিকল্প টেস্ট আছে কি?
পেপ টেস্ট-এর একটি বিকল্প হচ্ছে VIA টেস্ট, যা আরো সহজে ও কম খরচে করা যায়। তবে সব ল্যাবরোটরিতে VIA টেস্ট হয় না।

বলা যায়, জরায়ু ক্যন্সার একটি প্রতিরোধ যোগ্য রোগ। কারণ এই টেস্টের মাধ্যমে ক্যান্সার হবার আগেই তা নির্ণয় করা সম্ভব ।

ডা. নুসরাত জাহান, অ্যাসোসিয়েট কনসালটেন্ট (অবস-গাইনি)
ইমপেরিয়াল হাসপাতাল লিমিটেড, চট্টগ্রাম

About Post Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *