সহজ ও কার্যকর ব্যায়াম সাঁতার

সাঁতার হলো একমাত্র ব্যায়াম, যা সব বয়সীদের জন্য সহজ ও কার্যকর। অস্টিওপোরোসিস বা আর্থ্রাইটিসের কারণে হাঁটুর ব্যথা হওয়ায় অনেকের পক্ষে হাঁটা বা ভারী ব্যায়াম করা সম্ভব হয় না। তাঁদের জন্য সাঁতার সহজ সমাধান। এ ছাড়া মেরুদণ্ডের সমস্যায়ও সাঁতার খুব উপকারী।

সাঁতার হলো এমন একটি ব্যায়াম, যেখানে শরীরের সব মাংসপেশি কাজ করে। এখানে পানিই হলো প্রতিবন্ধক। এ কারণে সাঁতারকে কম তীব্রতার অ্যারোবিক ব্যায়াম বলা হয়। আবার গবেষণায় দেখা গেছে, দুই মাইল দৌড়ের চেয়ে দুই মাইল সাঁতার বেশি কার্যকরী ব্যায়াম। কারণ, বাতাসের চেয়ে পানির ঘনত্ব বেশি থাকায় এ ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা বেশি হয়। ফলে মাংসপেশিকে বেশি কাজ করতে হয়।

সাঁতার হৃদ্‌রোগীদের জন্যও একটি চমৎকার ও সহজ ব্যায়াম। বয়স্কদের জন্য অনেক সময় হৃদ্‌যন্ত্রের কার্যকরী অ্যারোবিক ব্যায়ামগুলো কঠিন হয়ে থাকে। তাঁরা সহজেই সাঁতার বেছে নিতে পারেন। একই সঙ্গে শিশুদের জন্যও এটি একটি মজার খেলা এবং উপকারী ব্যায়াম। সাঁতারের ফলে শিশুদের ভারসাম্য ও সমন্বয় করার ক্ষমতা বাড়ে। ফলে তাঁদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশ দ্রুত হয়। সাধারণত চার বছর বয়সের মধ্যে সাঁতার কাটার জন্য শরীরের সব মাংসপেশি তৈরি হয়ে যায়। তাই এই বয়সের পর যেকোনো শিশুই সাঁতার শিখতে পারে।

নিয়মিত সাঁতার কাটার ফলে মাংসপেশি শক্তিশালী হয়, সহনশীলতা বাড়ে, হৃদপেশির কার্যকারিতা বাড়ে, ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং মাংসপেশির থলথলে ভাব কেটে গিয়ে স্থিতিস্থাপকতা বাড়ে। সপ্তাহে আড়াই থেকে তিন ঘণ্টা সাঁতারই যথেষ্ট। ৩০ মিনিট করে প্রতিদিন বা এক ঘণ্টা করে সপ্তাহে তিন দিন সাঁতার কাটা যেতে পারে। ৩০ মিনিটের সাঁতারে ২০০ ক্যালরির বেশি শক্তি ক্ষয় হয়। তাই ওজন কমাতে সাঁতার বেশ কার্যকর।

সাঁতার নানাভাবে করা যায়। যেমন উপুড় হয়ে হাত ও পা সোজা রেখে (ব্রেস্টস্ট্রোক), চিত হয়ে (ব্যাকস্ট্রোক) অথবা প্রজাপতির (বাটারফ্লাই স্ট্রোক) মতো বা হাত-পা ছড়িয়ে ইচ্ছেমতো সাঁতার কাটা যায়। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি কার্যকর পদ্ধতি হলো ব্রেস্টস্ট্রোক।

সাঁতার শুরুর আগে কিছু স্ট্রেচিং করে নিতে হবে। যেমন ঘাড়, কাঁধ, পিঠ, হাত ও পায়ের মাংসপেশি স্ট্রেচিং বা টানা দিয়ে সাঁতার শুরু করা উচিত। শুরুর অন্তত এক থেকে দেড় ঘণ্টা আগে কিছু কার্বোহাইড্রেট যেমন রুটি, কলা বা আলুর মতো খাবার খাওয়া উচিত। খালি পেটে সাঁতার কাটা উচিত নয়। সাঁতার শেষ হওয়ার ৩০ মিনিটের মধ্যে শর্করা, প্রোটিন বা ভিটামিন–জাতীয় খাবার যেমন ফল, জুস, বাদাম ইত্যাদি খেতে হবে।

About Post Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *