থামছে না ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যু। গত ২৪ ঘণ্টায় আরও তিন ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যু হয়েছে। ডেঙ্গুতে মৃত্যুর সংখ্যা সরকারী হিসাবে ৮১ জন হলেও বেসরকারী হিসাবে তা অনেক আগেই ২৫০ ছাড়িয়ে গেছে। রবিবার আবার বেড়েছে নতুন ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা। আর বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ছিল এক হাজার তিন শ’র ওপরে। এ বছর জানুয়ারি থেকে ৬ অক্টোবর পর্যন্ত সর্বমোট ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৮৯,৯৩০ ও ছাড়প্রাপ্ত রোগীর সংখ্যা ৮৮,৩৫৬।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যের পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন ভর্তি ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ৩১৪। এদের মধ্যে ঢাকায় নতুন ভর্তি ৭৩ এবং ঢাকার বাইরে ২৪১। সারাদেশে বর্তমানে ভর্তি ডেঙ্গু ও সন্দেহজনক ডেঙ্গু রোগীর সর্বমোট সংখ্যা ১৩৩৮। ঢাকা মহানগরীতে বর্তমানে মোট ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৪৭০ এবং ঢাকার বাইরে ৮৬৮। রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটে (আইইডিসিআর) ডেঙ্গু সন্দেহে ২৩৬ জনের মৃত্যুর তথ্য প্রেরিত হয়েছে। তাদের মধ্যে আইইডিসিআর ১৩৬ জনের মৃত্যু পর্যালোচনা সমাপ্ত করে ৮১ জনের মৃত্যু ডেঙ্গুজনিত বলে নিশ্চিত করেছে, জানিয়েছে আইইডিসিআর।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম আরও জানায়, বর্তমানে ঢাকা শহর ছাড়া ঢাকা বিভাগে ১২৩, চট্টগ্রামে বিভাগে ১১৯, খুলনা বিভাগে ৩৮৯, রংপুর বিভাগে ১৮, রাজশাহী বিভাগে ৭৭, বরিশালের ৬ জেলায় ৯৭, সিলেট বিভাগের ৪ জেলায় ৬ এবং ময়মনসিংহ বিভাগের চারটি জেলায় ২৯ ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন।
সূত্রটি আরও জানায়, ঢাকা শহরে অবস্থিত হাসপাতালের মধ্যে বর্তমানে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ১২২, মিটফোর্ড হাসপাতালে ৮১, ঢাকা শিশু হাসপাতালে ৮, শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ৪২, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৮, রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে ৪, মুগদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ২৩, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ৩১ এবং কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ৫২ ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন।
আর গত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা শহরে অবস্থিত হাসপাতালের মধ্যে নতুন রোগী ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ১৬, মিটফোর্ড হাসপাতালে ১২, ঢাকা শিশু হাসপাতালে ২, শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ৮, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫, মুগদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ৫, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ২ এবং কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ৪ জন নতুন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন।
চট্টগ্রামে ডেঙ্গু আক্রান্ত আরও এক রোগীর মৃত্যু হয়েছে। সুমি বৈদ্য (১৯) নামের এ রোগী ন্যাশনাল হসপিটালে মৃত্যুবরণ করেন।
ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মাগুরা জেলার শ্রীপুর উপজেলার সাচিলাপুর গ্রামের মাছুমা বেগম (৪১) নামে এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে। শনিবার রাতে ঢাকার মুগদা হাসপাতালে তিনি মারা যান। জেলার শ্রীপুর উপজেলা সাচিলাপুর গ্রামের বাসিন্দা মাছুমা বেগম গত ২৯ সেপ্টেম্বর জ্বর নিয়ে মাগুরার শ্রীপুরের দ্বারিয়াপুর হাসপাতালে ভর্তি হন।
কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে শামীম বিশ্বাস (২৫) নামে আরও এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার রাত সাড়ে এগারোটার দিকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। শামীম উপজেলার রিফায়েতপুর ইউনিয়নের ঝাউদিয়া কাগহাটি গ্রামের রফিকুল বিশ্বাসের ছেলে।
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ নরুন্নাহার জানান, শামীম ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। পরে চিকিৎসাধীন শনিবার রাতে তিনি মারা যান। সূত্র জনকণ্ঠ।