সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) জানিয়েছে, ১৫-২৫ বছরের তরুণরাই এবছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন বেশি। খবর বাংলাট্রিবিউনের।
আইইডিসিআর জানায়, ১-৫ বছর বয়সীদের ডেঙ্গুতে আক্রান্তের হার ৭.১১ শতাংশ, ৫-১৫ বছর বয়সীদের আক্রান্তের হার ১৭.৪৯ শতাংশ। আর ১৫-২৫ বছর বয়সীদের আক্রান্তের হার ৩০.৮৩ শতাংশ। ২৫-৩৫ বছর বয়সীদের ডেঙ্গুতে আক্রান্তের হার ২০.৪০ শতাংশ। ৩৫-৪৫ বছর বয়সীরাদের আক্রান্তের হার ১০.১৯ শতাংশ। ৪৫-৫৫ বছরের বয়ষী আক্রান্তের হার ৬.৭৪ শতাংশ এবং ৫৫-৬৫ বছর বয়সীদের আক্রান্তের হার ৩.২৯ শতাংশ। হাসপাতালে ভর্তি ডেঙ্গু রোগীদের বয়স, লিঙ্গ বিশ্লেষণ করে এ তথ্য জানিয়েছে আইইডিসিআর। ঢাকায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে গ্রামের বাড়ি ঠাকুরগাঁওয়ে যান ১৭ বছরের অপি। ঠাকুরগাঁও হাসপাতালে পাঁচদিন ভর্তি থাকার পর অবস্থার অবনতি হলে দিনাজপুর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসার পথে সে মারা যায়। অপির বাবা মিহির কুমার রায় জানান, কোচিং করতে ঢাকায় এসেছিলেন অপি।
তরুণরাই বেশি আক্রান্ত কেন জানতে চাইলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) মেডিসিন অনুষদের সাবেক ডিন ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা.এ বি এম আব্দুল্লাহ বলেন, ‘এটা আসলে বোঝা মুশকিল। কারণ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকায় সাধারণত শিশু ও গর্ভবতী নারীদের ভালনারেবল বলে থাকি আমরা। কিন্তু এই বয়সীরা তো আর সেটা নয়। কিন্তু কেন যে এবারে এই বয়সীদের আক্রান্তের হার বেশি সেটা একটা গবেষণার বিষয়। সাধারণভাবে বলা যায়, ১৫-২৫ বছর বয়সীরা বাইরে গিয়েছে বেশি, তাই তাদের এক্সপোজার বেশি।’
একই কথা বলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমারজেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের সহকারী পরিচালক ডা. আয়শা আক্তার। তিনি বলেন, ‘এই বয়সীরা সাধারণত স্কুল-কলেজে যায়, কেউ কেউ আবার বাইরেও কাজ করেছে। এজন্যই এবারে এ বয়সীরা বেশি আক্রান্ত হয়েছে।’
এ বিষয়ে বিএসএমএমইউ এর ভাইরোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সাইফ উল্লাহ মুন্সী বলেন, ‘এটাই ডেঙ্গুর নরমাল ডিস্ট্রিবিউশন। ডেঙ্গুর ধরনটাই এমন যে এক্সট্রিম বয়সে কম থাকবে, মিডল বয়সে বেশি থাকবে। শিশুরা সাধারণত পোশাকে ঢাকা থাকে, বাসায় থাকে। ফলে ওদের এক্সপোজ এরিয়া তুলনামূলক কম থাকে। এটাও একটা কারণ। বৃদ্ধরাও পোশাকে ঢাকা থাকেন। আরেকটি বড় কারণ হচ্ছে বৃদ্ধদের চামড়া লুজ হয়। মশার আরেকটি বিশেষত্ত্ব হচ্ছে, মশা টানটান চামড়াতে বসে কামড়ায়, লুজ স্কিন মশা প্রেফার করে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘বৃদ্ধদের বেশি আক্রান্ত না হওয়ার আরেকটি বড় কারণ ইমিউনিটি। দেখা যাবে, এর আগে হয়তো তাদের ডেঙ্গু হয়ে গেছে। তাই তাদের ইমিউনিটি ভালো।’
সরকারি হিসাব অনুযায়ী, এ বছর এখন পর্যন্ত ৮১ জন ডেঙ্গুতে মারা গেছেন।