ফার্মেসির মালিকরাই ডাক্তার সেজে চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। হাতিয়ে নিচ্ছেন লাখ লাখ টাকা। এদের কারণে বাড়ছে উচ্চ মাত্রার এন্টিবায়োটিক ও মানহীন ওষুধ ব্যবহারের ঝুঁকি। আগানগর ইউনিয়নে এ রকম তিন ফার্মেসি মালিকের খোঁজ পাওয়া গেছে যারা ‘ডাক্তার সেজে’ রীতিমতো প্রেসক্রিপশন লিখে দৈনিক শত শত রোগী দেখছেন। নিচ্ছেন ‘ডাক্তারী ফি’। অধিক মাত্রায় ওষুধ বিক্রির পাশাপাশি কমিশনের লোভে রোগীদের বিভিন্ন প্যাথলজিক্যাল রিপোর্ট করতে পাঠাচ্ছেন অখ্যাত সব ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। খবর জনকণ্ঠের।
আগানগর ছোট মসজিদের পেছনের গেট বরাবর উল্টো পাশে রয়েছে কাসিফ মেডিক্যাল হল। ফার্মেসির মালিক কাসিফ করিম। কয়েক বছর আগে ছোট একটি দোকান ভাড়া নিয়ে ওষুধ বিক্রি করতেন। ছিল না কোন কর্মচারী। কয়েক বছরের ব্যবধানে সেই আসিফ করিম এখন ‘বিশেষজ্ঞ’ ডাক্তার। প্রতিদিন শতাধিক রোগী দেখেন তিনি। দোকানের আয়তন বেড়েছে কয়েকগুণ। সঙ্গে বেড়েছে কর্মচারীর সংখ্যা। সারাদিন দোকানে আসেন না তিনি। কর্মচারীরা দোকান চালায়। রাত ৮টার দিকে ফার্মেসির নির্দিষ্ট চেম্বারে রোগী দেখা শুরু করেন তিনি যা চলে মধ্যরাত অবধি। এখান থেকে সোজা কিছুটা সামনে গেলে মিলবে শিহাব ফার্মেসি। ফার্মেসির মালিক ওবায়দুর রহমান। দীর্ঘ সময় ধরেই তিনি রোগী দেখছেন। প্রেসক্রিপশনে লিখেছেন পল্লী চিকিৎসক। তিনি রোগীদের কাছ থেকে ফিস নেন ৫০ টাকা। রোগীদের প্যাথলজিক্যাল রিপোর্ট করতে গিয়ে তিনি নিজেই রোগীদের রক্ত সংগ্রহ করে রেখে দেন। পরে জিনজিরার একটি অখ্যাত ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে এগুলো পরীক্ষা করে আনেন। প্রতিদিন শতাধিক রোগী দেখেন তিনি। নানা অভিযোগের কারণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জেরার মুখে পড়তে হয়েছে তাকে।
এদিকে আগানগর ব্রিজের নিচে হাওলাদার ফার্মেসি মালিক মোহনলাল হাওলাদার। স্থানীয়রা তাকে জানেন, ‘বাবু ডাক্তার’ হিসেবে। এক সময় ওষুধের দোকানে কর্মচারী হিসেবে চাকরি করলেও বর্তমানে ফার্মেসি দিয়ে সেজেছেন ‘ডাক্তার’। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত তিনি রোগী দেখেন। ফিস নেন ৪০ টাকা। তিনিও রোগীদর প্রেসক্রিপসন লেখেন, রোগীদের বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা করতে ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পাঠান। ফার্মেসি মালিকদের ‘ডাক্তার সেজে’ চিকিৎসা সেবা দেয়ার বিষয়ে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা ওষুধ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি এম এ গফুর বলেন, যারা এমনটা করছেন তারা অনৈতিক কাজ করে টাকা পয়সা হাতাচ্ছেন।
তবে অনেকে আছেন ছোটখাটো রোগ যেমন জ্বর সর্দির জন্য কিছু ওষুধ দেন। কেরানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রধান ডাঃ মোবারক হোসাইন বলেন, বিএমডিসি রেজিস্ট্রেশন ছাড়া ডাক্তার সেজে কেউ প্রেসক্রিপসন লিখতে পারবেন না। এমনকি প্যাথলজিক্যাল রিপোর্ট করতে পারবেন না।