শরীয়তপুর জেলার সদর হাসপাতালে দুই মাস ধরে জলাতঙ্করোধী প্রতিষেধকের সরবরাহ নেই। কুকুর কামড়ালে জলাতঙ্ক রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর আশঙ্কা থাকে। হাসপাতালগুলোতে জলাতঙ্করোধী টিকার সহজলভ্যতার বিষয়টি তাই খুবই জরুরি। কিন্তু কুকুর কামড়ানো রোগীরা শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে গিয়ে টিকা পাচ্ছে না। ফলে তারা বাইরে থেকে চড়া দামে টিকা কিনতে বাধ্য হচ্ছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জেলা শহরের হাসপাতালগুলোয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মাধ্যমে ‘রাবিপুর’ নামে জলাতঙ্কের এই ভ্যাকসিন সরবরাহ করে থাকে। শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে গত বছরের নভেম্বর মাসে এক হাজার এবং এ বছরের মে মাসে ৩২০টি প্রতিষেধক সরবরাহ করা হয়। জুলাই মাসের শেষের দিকে সেগুলো শেষ হয়ে যায়। কিন্তু সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দুই মাসে এই প্রতিষেধকের নতুন চাহিদাপত্র স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে পাঠায়নি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের এই গাফিলতি গ্রহণযোগ্য নয়
প্রাণঘাতী রোগ জলাতঙ্ক হয় র্যাবিস ভাইরাসে আক্রান্ত কুকুর, বিড়াল, বানর, শিয়াল, গরু, ছাগল, ইঁদুরের মাধ্যমে। এসব প্রাণী কামড় বা আঁচড় দেওয়ার পর দ্রুত টিকা না নিলে জলাতঙ্ক রোগের ঝুঁকি থাকে। এ রোগে খাবার গিলতে ও পানি পানে অসুবিধা হয়। একসময় তৈরি হয় তীব্র পানিভীতি। আর জলাতঙ্ক রোগের উপসর্গ শুরু হয়ে গেলে কোনো চিকিৎসাই কাজে আসে না, মৃত্যু অনিবার্য হয়ে ওঠে। তাই কুকুর ও অন্যান্য প্রাণীর কামড় বা আঁচড়ের পর দ্রুত প্রতিষেধক নেওয়াই একমাত্র পথ। অথচ শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে দুই মাস ধরে এই মারাত্মক রোগের টিকার সরবরাহই নেই। যে টিকা এলাকাবাসীর বিনা পয়সায় পাওয়ার কথা, সেই টিকা বাইরে থেকে কিনতে হচ্ছে ৬০০ টাকা দিয়ে। জলাতঙ্ক রোগ নিরোধের জন্য ২৮ দিনে পাঁচটি প্রতিষেধক নিতে হয়। এতে দরিদ্র মানুষেরা বিপাকে পড়ছেন।
প্রতিষেধকের সরবরাহ না থাকার কারণ সম্পর্কে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের ভান্ডাররক্ষক আবুল হোসেন জানিয়েছেন, কম্পিউটার অপারেটর না থাকায় নতুন চাহিদাপত্র প্রস্তুত হয়নি, তাই তা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে পাঠানো যায়নি। এমন একটি জরুরি প্রতিষেধকের ক্ষেত্রে এমন খোঁড়া অজুহাত অগ্রহণযোগ্য।
আমরা আশা করব, দ্রুত শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে জলাতঙ্কের প্রতিষেধক সহজলভ্য হবে। সরকারের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকেও দেশের সব হাসপাতালে জলাতঙ্কসহ সব ধরনের রোগের প্রতিষেধক সরবরাহের ব্যাপারে সজাগ থাকতে হবে।