নীলফামারী সদর আধুনিক হাসপাতালে মেয়াদোত্তীর্ণ একমি কোম্পানির সোডিয়াম হাইড্রোক্লোরাট স্যালাই রোগীর চিকিৎসায় সরবরাহ করার ঘটনায় রোগীর এলাকার মানুষজন বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছে। রবিবার বেলা ১২টার দিকে সিভিল সার্জন অফিসের সামনে তারা বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করে। এ সময় সিভিল সার্জন ও পুলিশ ঘটনাটি তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিলে বিক্ষোভকারীরা এক ঘণ্টা পর এলাকা ত্যাগ করে। এ ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্তটিম গঠন করা হয়েছে।
নীলফামারী শহরের কলোনি মহল্লার আব্দুল ওয়াবের স্ত্রী মল্লিকা বেগম (৫৫) গ্যাস্ট্রিক ও বুকের ব্যথা নিয়ে শনিবার রাত ১০টায় হাসপাতালে এসে ভর্তি হয়। জরুরী বিভাগের চিকিৎসকের পরামর্শে ওই রোগীকে ওয়ার্ডের সেবিকা রোগীর শরীরে সোডিয়াম হাইড্রোক্লোরাট স্যালাই পুশ করে। রোগী মল্লিকা বেগমের ছেলে মোঃ সানোয়ার হোসেন (৩৪) অভিযোগ করে জানায় স্যালাই চলাকালে দেখতে পাই আমার মাকে ১০১১৭০০৬ ব্যাচ নম্বরের ২০১৭ সালের মে মাসে উৎপাদিত ও ২০১৯ সালের মে মাসে মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে যাওয়া সোডিয়াম হাইড্রোক্লোরাট স্যালাই পুশ করা হয়েছে। যা মায়ের শরীরে প্রবেশ করছে। তাৎক্ষণিকভাবে ওয়ার্ডের নার্সদের ডেকে এসে মায়ের শরীর থেকে স্যালাই আউট করে দেয়া হয়। খবর পেয়ে আবাসিক মেডিক্যাল অফিসারসহ অন্যান্য ডাক্তাররা ছুটে আসে।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, রাতেই রোগীর লোকজন এসে হাসপাতালে উত্তেজনা সৃষ্টি করলে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। এরপর রবিবার দুপুর ১২টার দিকে রোগীর লোকজন এসে সিভিল সার্জন কার্যালয় ঘেরাও করে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করতে থাকে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) রুহুল আমিন, সদর থানার ওসি মোমিনুল ইসলামসহ পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ব্যাপারে সিভিল সার্জন ডাঃ রনজিৎ কুমার বর্মণ এমন ঘটায় দুঃখ প্রকাশ কররে বলেন, হাসপাতালের চিকিৎসকরা তাৎক্ষণিকভাবে ওই রোগীর প্রয়োজনী চিকিৎসা প্রদান করেছে। তবে ওই মেয়াদোত্তীর্ণ স্যালাইনে রোগীর শারীরিক কোন ক্ষতি হয়নি। তিনি যে রোগ নিয়ে ভর্তি হয়েছেন তার সুচিকিৎসায় রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন। তিনি জানান, এ ঘটনায় হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডাঃ রেজাউল করিমকে প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করে আগামী তিন দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। তদন্ত শেষে দোষী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনা হবে।