‘ব্রেস্ট সিস্ট’ স্তনের এমন একটি অবস্থা যা সাধারণত বিপজ্জনক নয়। স্তনে চাকার অন্যতম একটি কারণ হলো ‘ব্রেস্ট সিস্ট’। অনেক ক্ষেত্রেই এটি সংখ্যায় একের অধিক হয়ে থাকে এবং এক পাশে বা উভয়পাশের স্তনেই হতে পারে।
ব্রেস্ট সিস্ট কি এবং কেন হয়: স্তন তৈরি হয় লবিউল্স / Lobules(Milk Producing Glands) Ges Wv±m& / Ducts (tube that carry milk to the nipple) এর সমন্বয়ে যা ফাইব্রাস (Fibrous) ও ফ্রাটি টিস্যু (Patty tissue) ধারনা করা হয়, বয়স বৃদ্ধির/বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শরীরে হরমোনাল (Hormonal) পরিবর্তন হয় যা স্তনের স্বাভাবিক গড়নে প্রভাব ফেলে এবং অনেক সময় পানি ভর্তি থলের মতোন (Fluid filled sacs) তৈরি হয় স্তনে, একেই ‘বেস্ট সিস্ট’ বলে।কাদের হয় : যদিও ‘ব্রেস্ট সিস্ট’ যে কোনো বয়সেই হতে পারে তবে সাধারণত এটি পঁয়ত্রিশ ঊর্ধ্বে (Over 35 years) মহিলাদের বেশি হয়ে থাকে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ঋতুজরার দিকে যাচ্ছেন এমন মহিলারা আক্রান্ত হন বেশি যা সাধারণত ঋতুজরায় আসার পর বন্ধ হয়ে যায়। মহিলারা যারা ‘হরমোন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি’ (Hormone Replacement Therapy) নিচ্ছেন তাদেরও ব্রেস্ট সিস্ট’র সম্ভাবনা বেশি থাকে।
কিভাবে বুঝবেন সিস্ট হয়েছে : সিস্ট সাধারণত স্তনে চাকা হিসেবে লাগতে পারে, যা নরম বা শক্ত যে কোনো ধরনের হতে পারে এবং সাইজটা কয়েক মিলিমিটার থেকে কয়েক মিটার পর্যন্তও হতে পারে। অনেক ক্ষেত্রেই সিস্ট থাকলে রোগী ব্রেস্টে অস্বস্তি বা ব্যথা অনুভব করে থাকেন। মাসিকের আগে অনেক সময় সিস্টগুলো আকারে বড় হয়ে ফুলে যেতে পারে ও ব্যথা বেড়ে যেতে পারে। তবে অনেক সময় স্তনে সিস্ট থাকলেও তা কোনো উপসর্গ তৈরি নাও করতে পারে। সেক্ষেত্রে তা সাধারণত পরীক্ষা-নিরীক্ষার সময় যেমন- আলট্রাসনোগ্রাম বা ম্যামোগ্রাম এর সময় ধরা পড়ে। যদি স্তনে চাকা বা পিন্ডের মতোন সহজে হাতে লাগে, তখন অনেক ক্ষেত্রে সিরিঞ্জের মাধ্যমে (FNAC) পানিটাকে টেনে বের করা হয় এবং তাতে নিশ্চিত হওয়া যায় যে এটি ব্রেস্ট সিস্ট।
চিকিৎসা : অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ব্রেস্ট সিস্টের জন্য কোনো চিকিৎসার প্রয়োজন হয় না। বেশির ভাগ সময় সিস্টগুলো সময়ের সঙ্গে স্তনে মিলিয়ে যায়। কিন্তু যদি সাইজটা বড় হতে থাকে এবং ব্যথা/কষ্টের কারণ হয়, তখন সাধারণত অ্যাসপিরেশন করা হয়। সিরিঞ্জের মাধ্যমে বের করে আনা তরলের রং-এর ভিন্নতা থাকতে পারে এবং তা স্বচ্ছ থেকে কালচে বিভিন্ন রং-এর হতে পারে। তবে যদি রস রক্ত মিশ্রিত বা রক্তাঙ্গ হয় তবে তা অবশ্যই পরীক্ষার জন্য পাঠাতে হবে। তরল টেনে বের করার পর সাধারণত সিস্ট মিলিয়ে যায়, অনেক সময় এ জায়গায় কালো দাগ হয়ে যেতে পারে এবং ব্যথা হতে পারে, যা নিজেই ভালো হয়ে যায়।
ডা. আফরিন সুলতানা
সার্জারি বিশেষজ্ঞ, হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেলকলেজ ও হাসপাতাল
সূত্রঃ বিডিপ্রতিদিন