ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রক্ত পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে কমপক্ষে ২৫ জন আহত হয়েছেন। হাসপাতালের ব্রাদার্স ও প্যাথলজিস্টদের মধ্যে গতকাল দুপুর ১২টা থেকে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। হাসপাতালের নতুন ভবনের দ্বিতীয়
তলায় প্যাথলজি বিভাগে রিপোর্ট সংগ্রহ করাকে কেন্দ্র করে এ সংঘর্ষের ঘটনার সূত্রপাত হয়েছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন। আহত সবাইকে ঢামেকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম নাসির উদ্দিন ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হাসপাতালের চারজন ব্রাদার গতকাল সকালে সিভিল পোশাকে প্যাথলজি বিভাগে যান। সেখানে গিয়ে তারা দায়িত্বরতদের একজন রোগীর রিপোর্ট তাড়াতাড়ি দেয়ার সুপারিশ করেন। তখন প্যাথলজি বিভাগ থেকে জানানো হয়, রোগীর চাপ আছে, রিপোর্ট দিতে দেরি হবে তাই অপেক্ষা করতে হবে। তখন ওই চারজন নিজেদের হাসপাতালের ব্রাদার পরিচয় দিয়ে রিপোর্ট তাড়াতাড়ি দেয়ার কথা বলেন। এসময় তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে প্যাথলজিস্ট আর ব্রাদারদের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয়। খবর পেয়ে সেখানে ছুটে আসেন প্যাথলজি বিভাগের প্রধান ডা. আবদুল আজিজ খান। তিনি ও আরেক সিনিয়র প্যাথলজিস্ট ব্রাদারদের তোপের মুখে পড়েন। এরপর ব্রাদাররা সেখান থেকে চলে আসেন।
পরিস্থিতিটা কিছুটা শান্ত হলে হাসপাতালের আরও কিছু ব্রাদার মিছিল নিয়ে প্যাথলজি বিভাগে যান। পরে প্যাথলজিস্টরা একত্রিত হয়ে ব্রাদারদের প্রতিহত করার চেষ্টা করেন। তখন আরেক দফায় সংঘর্ষ শুরু হয়। পরে হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ একে এম নাসির উদ্দিন ঘটনাস্থলে এসে হ্যান্ডমাইকে বলেন, আপনারা সবাই শান্ত হন। এটা হাসপাতাল এখানে মানুষ চিকিৎসা নেয়ার জন্য আসে। কি হয়েছে ব্যাপারটা আমরা দেখছি। পরিচালকের এই কথা শুনে সবাই ঘটনাস্থল থেকে চলে যায়।
ঢামেকে জরুরি বিভাগের ব্রাদার রাসেল বলেন, দুপুর সাড়ে ১২টায় এক আত্মীয়ের রক্তের রিপোর্ট আনতে আমি প্যাথলজি বিভাগে যাই। নিয়ম অনুযায়ী আমি সেখানে লাইনে দাঁড়িয়েছিলাম। অনেক্ষণ লাইনে থাকার পরও রিপোর্ট না পেয়ে যিনি রিপোর্ট দেন তাকে দেরি হওয়ার কারণ জানতে চাই। তখন ওনাকে আমি ব্রাদার বলে পরিচয় দেই। তিনি আমাকে বলেন, আপনি ব্রাদার হলেই আপনার রিপোর্ট তাড়াতাড়ি দিতে হবে? এমন কোনো কথা আছে। এরপরই বাকবিতণ্ডার সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে রিপোর্ট প্রদানকারী ওই ব্যক্তি আমার কলার ধরে মারধর করেন। আমার সঙ্গে থাকা তিনজন এর প্রতিবাদ করলে প্যাথলজির অন্য স্টাফরা মিলে সবাইকে মারধর করেন। প্যাথলজি বিভাগের কর্মচারী রুবেল বলেন, যারা তিন চার বছর আগে নার্স হিসাবে নিয়োগ পেয়েছেন তাদের আদব কায়দা বলতে নাই। তাদের কয়েকজন প্যাথলজি বিভাগে এসে উল্টাপাল্টা শুরু করেছিল।