গত সাত দিনে পরিস্থিতির আনুপাতিক হারে উন্নতি দেখা যাচ্ছে। ঈদের ছুটিতে ঢাকাসহ সারা দেশে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী ছাড়পত্র নিয়ে যাওয়ার হার আগের তুলনায় বেড়েছে। যদিও নতুন রোগী ভর্তির হার ওঠানামা করেছে। বেসরকারি তথ্য অনুযায়ী, ঈদের ছুটিতে একজন প্রকৌশলীসহ মারা গেছে ৯ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (রোগ নিয়ন্ত্রণ) অধ্যাপক ডা. সানিয়া তহমিনা বলেন, ‘আগের নজির অনুসারে প্রতিবছরই আমাদের দেশে আগস্টের শেষ থেকে সেপ্টেম্বরে ডেঙ্গুর পিক টাইম দেখা গেছে। এবার আগেই আমরা সেই পিকে উঠে গেছি। তার মানে সামনে কী পরিস্থিতি আসছে সেটার কোনো পূর্বাভাস পাওয়া যাচ্ছে না। আমাদের প্রস্তুতি থাকছে চলমান পরিস্থিতির চেয়ে খারাপ কিছু হলে সেটা মোকাবেলার জন্য। এ ক্ষেত্রে আবহাওয়া বড় একটি ফ্যাক্টর হিসেবে কাজ করবে। নতুন পানি আমাদের জন্য এখন বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠতে পারে।’ যদিও তিনি জানান, গত সাত দিনে পরিস্থিতির আনুপাতিক হারে উন্নতি দেখা যাচ্ছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুসারে, সরকারি হিসাবে ১১ আগস্ট সকাল ৮টা থেকে গতকাল সকাল ৮টা পর্যন্ত সারা দেশে নতুন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে পাঁচ হাজার ১৭৩ জন, আর পুরনোসহ হাসপাতাল ছেড়েছে ছয় হাজার ৫৪ জন। এর মধ্যে মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে গতকাল সকাল ৮টা পর্যন্ত সারা দেশে নতুন রোগী ভর্তি হয়েছে এক হাজার ৮৮০ জন। ঢাকায় ভর্তি হয়েছে ৭৫৫ জন। বাকি এক হাজার ১২৫ জন ঢাকার বাইরে। সব মিলিয়ে গতকাল সকাল পর্যন্ত সব সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি ছিল সাত হাজার ৮৬৯ জন ডেঙ্গু রোগী। এর মধ্যে ঢাকায় চার হাজার ১৪৩ জন। ঢাকার বাইরে তিন হাজার ৭২৬ জন।
কীটতত্ত্ববিদ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমান বলেন, ‘ভারি বৃষ্টি হলে মশার লার্ভা ধুয়ে নেওয়ার একটি ভালো লক্ষণ থাকে, তবে তার চেয়েও বেশি ঝুঁকি ডেকে আনে নতুন করে জমে ওঠা পানির ছোঁয়া পেয়ে ডিম ফুটে যাওয়ার সুযোগের মাধ্যমে। তাই বর্ষার পরপরই যদি দ্রুত জমে থাকা নতুন পানি অপসারণ করা যায়, ততই ভালো হবে।’
এদিকে অধ্যাপক ডা. সানিয়া তহমিনা গত সাত দিনের ডেঙ্গু পরিস্থিতি তুলে ধরে জানান, প্রতিদিনই যেমন হাসপাতালে নতুন রোগী ভর্তি হচ্ছে, আবার প্রতিদিনই হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে বাড়িও ফিরছে অনেক মানুষ। ১ জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া মোট রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৬ হাজার ৩৫১। আর গতকাল সকাল ৮টা পর্যন্ত হাসপাতাল ছেড়েছে মোট ৩৮ হাজার ৪৪২ জন।