বাকৃবি গবেষকের সাফল্য, দুই ঘণ্টায় ডেঙ্গু ভাইরাসের সিরোটাইপ নির্ণয়

স্ত্রী এডিস মশা ডেঙ্গু জ্বরের প্রধান বাহক। এই মশার কামড়ে ডেঙ্গু জ্বরের ভাইরাস মানবদেহে প্রবেশ করে এবং আক্রান্ত হয়। তবে এই জ্বরের জন্য দায়ী ডেঙ্গু ভাইরাসের চারটি সিরোটাইপ রয়েছে (ডেন-১, ডেন-২, ডেন-৩ ও ডেন-৪)। আমাদের দেশে ২০০০ সালে ডেঙ্গু জ্বরের মহামারী আকারে দেখা দেয়। সেই সময় ডেঙ্গু জ্বর ভাইরাসের এই চারটি সিরোটাইপের মধ্যে টাইপ-৩ ভাইরাসটি ছিল প্রিডোমিনেন্ট। ভাইরাসের সিরোটাইপ নির্ণয়ের জন্য অত্যন্ত সংবেদনশীল একটি মলিকুলার পদ্ধতির (মাল্টিপ্লেক্স আরটি-পিসিআর) উদ্ভাবন করেছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজি এ্যান্ড হাইজিন বিভাগের অধ্যাপক ড. মোঃ আলিমুল ইসলাম।

ওই প্রযুক্তির মাধ্যমে মাত্র দুই ঘণ্টায় ডেঙ্গু ভাইরাসের চারটি সিরোটাইপসহ চিকুনগুনিয়া ভাইরাসেরও সিরোটাইপ সঠিকভাবে নির্ণয় করা যাবে। বুধবার সকাল ১০টার দিকে মাইক্রোবায়োলজি এ্যান্ড হাইজিন বিভাগে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ওই কথা জানান তিনি। অধ্যাপক ড. মোঃ আলিমুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে দেশের বিভিন্ন হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে কিট (এনএস-১) দ্বারা ডেঙ্গু জ্বরের ভাইরাসের উপস্থিতি ও অনুপস্থিতির উপর নির্ভর করে রিপোর্ট দিয়ে থাকে। তবে সেটি ভাইরাসের কোন সিরোটাইপ দ্বারা হয়েছে তা জানা যায় না।

তাছাড়াও গণমাধ্যমে জানতে পারলাম কয়েকটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পরীক্ষা না করেই ভুল রিপোর্ট দিচ্ছে। কিন্তু ডেঙ্গু ভাইরাসের উপস্থিতির সঙ্গে সঙ্গে কোন সেরোটাইপের দ্বারা আক্রান্ত সেটা উল্লেখ করলে ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো এই ধরনের প্রতারণার আশ্রয় নিতে পারত না। আমাদের এই কিট দিয়ে খুব সহজেই রোগীটি ডেঙ্গু ভাইরাসের কোন সেরোটাইপ দিয়ে আক্রান্ত তা বলে দেয়া যাবে। ডেঙ্গু জ্বরের ভাইরাস সঠিকভাবে নির্ণয়ের জন্য (এনএস-১) কিটের স্পেসিফিটি এবং সেনসিটিভিটি এবং এটি কিভাবে সংরক্ষণ করা যায় তা নিয়ে গবেষকদের মধ্যে প্রশ্ন রয়েছে। ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত বিভিন্ন বয়সের ডেঙ্গুর জ্বরের রোগীর লক্ষণ ভিন্ন ভিন্ন হওয়ায় সিরোটাইপ (ডেন-৩) প্রিডোমিনেন্ট হলেও অন্যান্য সিরোটাইপও থাকার যথেষ্ট আশঙ্কা রয়েছে।

About Post Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *