ডেঙ্গুকে মহামারি ঘোষণা ফিলিপাইনে

চলতি বছরে মশাবাহিত রোগটিতে অন্তত ৬২২ জনের মৃত্যুতে জাতীয় ডেঙ্গু মহামারি ঘোষণা করেছে ফিলিপাইন। মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানায় প্রশান্ত মহাসাগরীয় এ দ্বীপরাষ্ট্রটি। খবর বিবিসি ও নিউইয়র্ক টাইমস।

ফিলিপাইনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাতে জানা গেছে, জানুয়ারি থেকে ২০ জুলাই পর্যন্ত অন্তত ১ লাখ ৪৬ হাজার মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে, গত বছরের একই সময়ের চেয়ে যা ৯৮ শতাংশ বেশি। যেসব এলাকায় জরুরী মনোযোগ দেয়া দরকার কর্মকর্তারা যাতে তা চিহ্নিত করতে পারেন সেজন্য মহামারি ঘোষণা করা হয়েছে।

মশার কামড়ে ফ্লু-র মতো অসুস্থতা দেখা দেয় যা ধীরে ধীরে মারাত্মক আকার ধারণ করে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) বলছে সাম্প্রতিক দশকগুলোতে বিশ্বব্যাপী নাটকীয়ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে ডেঙ্গু।

গত জুলাইয়ে প্রারম্ভিক ডেঙ্গু সতর্কতা ঘোষণা করেছিল ফিলিপাইন। ডেঙ্গু মহামারি ঘোষণা নিয়ে এক বিবৃতিতে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রী ফ্রান্সিসকো ডিউক বলেন, কোন কোন জায়গায় স্থানীয়ভাবে উদ্যোগ গ্রহণ জরুরী সেসব এলাকা চিহ্নিত করতে জাতীয় মহামারি ঘোষণা গুরুত্বপূর্ণ যাতে স্থানীয় সরকারী ইউনিটগুলো জরুরী তহবিলের মাধ্যমে পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে সক্ষম হয়।

পশ্চিমাঞ্চলীয় ভিসায়াসে রেকর্ডসংখ্যক ব্যক্তি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে, যেখানে প্রায় ২৩ হাজারেরও বেশি ফিলিপিনি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে। এছাড়া ক্যালাবার্জন, জাম্বোয়াঙ্গা উপদ্বীপ ও উত্তর মিন্দানাওয়েও বড় আকারের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে।

টানা তিন সপ্তাহ ধরে মহামারি মাত্রা অতিক্রম করেছে সাতটি অঞ্চল। ডেঙ্গু প্রতিষেধক নিয়ে সম্প্রতি ভয় ছড়িয়ে পড়ায় ফিলিপাইনে সাম্প্রতিক সময়ে প্রতিরোধযোগ্য রোগের টিকাদান কর্মসূচিতে বড় পতন লক্ষ্য করা গেছে।

২০১৬-২০১৭ মেয়াদে ৮ লাখ শিশুকে ডেঙ্গুর প্রথম প্রতিষেধক ডেংভ্যাক্সিয়া দেয়ার পর ১৪ শিশু মারা গেলে তা নিয়ে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ে। প্রতিষেধকটির প্রস্তুতকারক কোম্পানী সানোফি এবং স্থানীয় বিশেষজ্ঞরা বলছে, শিশুদের মৃত্যুর পেছনে ওই ওষুধের কোন সংশ্লিষ্টতা নেই।

বিশ্বব্যাপী প্রতিবছর ৪০ কোটি মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছে যার বেশিরভাগই গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ও আধা-গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলের। আক্রান্ত শিশুদের মধ্যে মারাত্মক প্রদাহ লক্ষ্য করা গেছে।

ডেঙ্গুর লক্ষ্যণের মধ্যে রয়েছে-জ্বর, চোখের পেছনে ব্যাথা এবং লাল লাল ফসুকুড়ি উঠা। আক্রান্ত হওয়ার চার থেকে ১০ দিনের মধ্যে সাধারণত এগুলো দেখা দেয় এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এক সপ্তাহের মধ্যে কেটে যেতে পারে। ২০১৭ সালের ডিসেম্বর থেকেই ডেঙ্গু মোকাবেলায় হিমশিম খাচ্ছে ফিলিপাইন সরকার যখন দেশটিতে ডেঙ্গভ্যাক্সিয়া প্রতিষেধক ব্যবহার বন্ধ হয়ে যায়।

About Post Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *