এমন একটা সময় ছিল যখন বাবা-মা এর প্রধান দুশ্চিন্তা ছিল যে শিশুটি বেঁচে থাকবে তো? এর কারণ ছিল কয়েকটি মারাত্মক রোগ। যক্ষ্মা, হাম, ধনুষ্টঙ্কার এর মত প্রাণঘাতী রোগগুলো ছিল অসংখ্য শিশুর মৃত্যুর কারণ। কিন্তু বিজ্ঞানের অগ্রগতি দিয়েছে রক্ষাকবচ। আজ একটি টিকাই এই ভয়াবহ রোগকে চিরতরে দূরে ঠেলে দিতে পারে। সরকার আর দাতা সংস্থার মাধ্যমে পরিচালিত এনজিও গুলোর অক্লান্ত পরিশ্রমে আজ আমাদের দেশের প্রসূতি ও নবজাতকের স্বাস্থ্য সেবা বিশ্বের অনেক দেশের কাছেই রোল মডেল।শিশুর জন্মের ১ বছরের মধ্যে ৭ টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ টিকা শিশুকে দিতে হবে। আমাদের দেশে সরকারী ব্যবস্থাপনায় বিনামূল্যে এই সকল টিকাদান কর্মসূচী পরিচালিত হয়।
ইপিআই কার্যক্রমের মাধ্যমে টিকা দিয়ে যে আটটি রোগ প্রতিরোধ করা যায় সেগুলো হলোঃ ধনুষ্টংকার, ডিপথেরিয়া, হুপিংকাশি, পোলিও, হাম, যক্ষ্মা, হেপাটাইটিস -বি, হেমোফাইলাস ইনফ্লুয়েঞ্জা । এই সবকটি রোগই সংক্রামক এবং বাংলাদেশে বিদ্যমান। এক বৎসরের কম বয়সের শিশুদের এগুলো অত্যন্ত মারাত্মক অবস্থার সৃষ্টি করে। এই সবকটি রোগই টিকাদানের মাধ্যমে প্রতিরোধ করা সম্ভব।
শিশুর টিকা প্রদানের তালিকা | ||
টিকার নাম | যে বয়সে দেয়া উচিত | ডোজ |
বিসিজি | জন্ম-২ সপ্তাহ | |
পোলিও | জন্ম-২ সপ্তাহ | অতিঃডোজ |
পেনটাভ্যালেন্ট ভ্যাক্সিন | ৬ সপ্তাহ | ১ম ডোজ |
১০ সপ্তাহ | ২য় ডোজ | |
১৪ সপ্তাহ | ৩য় ডোজ | |
হাম | ৯ মাস | ১ম ডোজ |
এমএমআর | ১৫-১৮ মাস | ১ম ডোজ |
নিউমোনিয়া | ৬ সপ্তাহ | ১ম ডোজ |
১০ সপ্তাহ | ২য় ডোজ | |
১৮ সপ্তাহ | ৩য় ডোজ |
জলবসন্ত (Chicken Pox), টাইফয়েড আর হেপাটাইটিস এ এর টিকা EPI তে দেয়া হয় না। কেও চাইলে নিজে
কিনে কোন হাসপাতাল বা ডাক্তারের কাছ থেকে দিয়ে নিতে পারেন। অনেক প্রাইভেট হাসপাতাল বা ভ্যাক্সিনেশন সেন্টারে এগুলি পাওয়া যায়। তাই নবজাতকের সুস্থতার জন্য ই পি আই থেকে এই অত্যাবশ্যকীয় টীকাগুলো দেয়ানোর পাশাপাশি বাকি টিকাগুলোও বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে সময়মতো দিয়ে দেয়া উচিত। আদরের সন্তান ভালো থাকুন সচেতনতায় আর সুস্থতায়।