মহাখালীর ঘনবসতিপূর্ণ সাততলা বস্তির ঘরে ঘরে এখন জ্বরে আক্রান্ত রোগী। কেউ স্থানীয় ফার্মেসি থেকে ওষুধ কিনে খাচ্ছেন, কেউ আবার চিকিৎসক দেখিয়ে ব্যবস্থাপত্র নিয়ে বাড়িতে রেখে চিকিৎসা করাচ্ছেন। তবে দারিদ্র্য ও অসচেতনতার কারণে জ্বরে আক্রান্ত অধিকাংশ রোগী হাসপাতালমুখী না হওয়ায় কতজন ডেঙ্গু আক্রান্ত সেই হিসাব উঠে আসছে না কোনো পরিসংখ্যানে। ঘনবসতিপূর্ণ হওয়ায় এখানে ডেঙ্গু মহামারী আকার নিতে পারে বলে আশঙ্কা বাসিন্দাদের। তাদের অভিযোগ, সারা দেশে ডেঙ্গুর এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতেও বস্তিতে মশার ওষুধ দেওয়া হচ্ছে না।
তাদের বক্তব্যের সত্যতা পাওয়া গেছে কবরস্থান সড়কে জমে থাকা পানিতে গিজ গিজ করা মশার লার্ভা দেখে। গতকাল সরেজমিন বস্তি ঘুরে ও বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বস্তিতে সাড়ে ৮ হাজার ঘরে প্রায় ৪০ হাজার মানুষের বাস। এক-তৃতীয়াংশের বেশি পরিবারে কেউ না কেউ জ্বরে আক্রান্ত। তবে সবার ডেঙ্গু কিনা তা নিশ্চিত নয়। টাকার অভাবে অধিকাংশই পরীক্ষা করান না। বাসিন্দারা অভিযোগ করেন, এখানে মশার ওষুধও দেওয়া হয় না। এক সপ্তাহ আগে একজন এসে দুই-তিনটা সড়কে ধোঁয়া দিয়ে চলে গেছে। অন্য জায়গায় দেওয়ার কথা বললে জানায়, ওষুধ শেষ। এরপর আর কেউ আসেনি। এ সময় তারা বিভিন্ন নালায় কিলবিল করা মশার লার্ভা দেখান। জমে থাকা পরিষ্কার পানিতে বংশবিস্তার করায় ডেঙ্গুবাহী এডিস মশাকে অনেকে ‘ধনীপাড়ার মশা’ বললেও ঘনবসতিপূর্ণ বস্তিতে এ মশার বিস্তার ও ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব ভয়ঙ্কর পরিণতি ডেকে আনতে পারে বলে ধারণা বস্তিবাসীর।
সেখানে সবার মধ্যে আতঙ্কের পাশাপাশি ক্ষোভ দেখা গেছে। এমনকি এসব সংবাদ লিখে কোনো লাভ হবে না বলেও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কেউ কেউ। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ২০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. নাসির বলেন, এখানে স্বাস্থ্য অধিদফতরের অনেক বড় একটা পুকুরে হাজার হাজার টন কচুরিপানা জমে আছে। এটা মশার বড় প্রজননস্থল। পরিষ্কার করার জন্য অনেকবার চিঠি দিয়েছি। করে না।