রক্ত চাপ বেশি হলে রক্তবাহী শিরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সেই সঙ্গে ঝুঁকি বাড়ে হৃদরোগের।
তাই রক্ত চাপ সম্পর্কে ধারণা থাকা উচিত।
স্বাস্থ্যবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ভারতীয় পুষ্টিবিদ অনুপমা মেননের দেওয়া তথ্যানুসারে কীভাবে উচ্চ রক্তচাপ হৃদযন্ত্রের ক্ষতি করে সে বিষয়ে জানানো হল।
দীর্ঘসময় ধরে রক্তচাপ প্রয়োজনের অতিরিক্ত হলে তা নাড়ি বা ধমনির দেয়ালকে ক্ষতিগ্রস্ত করে, বাড়ায় সেখানে চর্বি জমে যাওয়ার আশঙ্কা। চর্বি জমলে ধমনি পুরু হয়ে যাবে, ফলে রক্ত সঞ্চালন ব্যহত হবে এবং ক্ষতিগ্রস্ত হবে হৃদযন্ত্র ও মস্তিষ্ক।
শুধু তাই নয়, উচ্চ রক্তচাপের কারণে দেখা দিতে পারে লিঙ্গ দৃঢ় হওয়াতে অক্ষমতা, স্মৃতিশক্তি লোপ পাওয়া, বৃক্কের ক্ষতি, বাত এবং আরও অনেক মারাত্বক রোগ।
তাই এবিষয়ে সচেতন হওয়ার জন্য চাই পর্যাপ্ত জ্ঞান। উচ্চ রক্তচাপ কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়, কেমন জীবনযাপন করলে এই ঝুঁকি কমবে সেটাও জানতে হবে। আর শুধু জানলেই চলবে না, তা নিজের জীবনে ব্যবহারও করতে হবে।
উপসর্গ: প্রচণ্ড মাথাব্যথা, বুকে ব্যথা, শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা, অনিয়মিত হৃদস্পন্দন, ঘাড়, বুক ও কানে দপদপানি ইত্যাদি উচ্চ রক্তচাপের সাধারণ উপসর্গ। শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে সচেতন হওয়া এই সমস্যার উপসর্গ বোঝার প্রধান উপায়। তাই শরীর সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করতে হবে।
জীবনযাত্রায় পরিবর্তন
– উচ্চ রক্তচাপে লবণ বেশ ক্ষতিকর। তাই লবণ দৈনিক আধা চা-চামচের বেশি খাওয়া যাবে না। আধা চা-চামচ লবণ মানে প্রায় ১,৫০০ মি.লি.গ্রাম।
– প্রক্রিয়াজাত খাবার খাওয়ার মাত্রাও কমাতে হবে। কারণ এতেও প্রচুর পরিমাণে লবণ থাকে।
– কোমরের বেড় কমাতে হবে। যেসব পুরুষের কোমরের বেড় ৪০ এর বেশি তাদের উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বেশি।
– মদ্যপান বর্জণ করতে হবে। শরীরের ক্ষতি তো করেই, মদের কারণে ওষুধের কার্যকারিতাও কমে যায়।
– মানসিক চাপ বাড়লেও রক্তচাপ বাড়ে। দীর্ঘমেয়াদি মানসিক চাপ ঘন ঘন রক্তচাপ বাড়ায় এবং রক্তচাপ বাড়ায় এমন হরমোন নিঃসরণ করানোর মাধ্যমে তা উচ্চমাত্রায় ধরে রাখে। এক্ষেত্রে নিজের চারপাশের পরিবেশ থেকেই মিলবে সহযোগিতা। যত্ন আর ভালোবাসা চাইতে বড় কোনো ওষুধ নেই।
খাদ্যাভ্যাস
– বেদানা, জাম, দুগ্ধজাত খাবার, স্যামন মাছ, ওটমিল, ডার্ক চকলেট ইত্যাদি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য উপকারী খাবার। সালাদ কিংবা স্ন্যাকস হিসেবে এগুলো নিয়মিত খেলে রক্তচাপের লাগাম হাতে আসবে।
– প্রচুর পরিমাণে পটাসিয়াম আছে এমন খাবার যেমন: কলা, অ্যাভোকাডো, বাঙ্গী, মাশরুম, টমেটো, টুনা মাছ, সীমজাতীয় খাবার ইত্যাদি রক্তচাপ কমাতে সহায়ক।
– কমলা, কিউই, পেয়ারা, লেবু ইত্যাদি ভিটামিন সি যুক্ত খাবার। উল্লেখযোগ্য মাত্রায় রক্তচাপ কমায়।
– রসুন, গাঢ় সবুজ পত্রল শাকসবজি, বিট, বাদাম, বীজ ইত্যাদি শরীরে নাইট্রিক অক্সাইডের উৎপাদন বাড়ায়। এটি ধমনির স্থিতিস্থাপকতা বাড়ায়, যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে অত্যন্ত উপকারী।
– গাঁজানো খাবার অন্ত্রে স্বাস্থ্যকর ব্যাকটেরিয়ার পরিমাণ বাড়ায়, যা হজমের ক্ষমতা বাড়ায় এবং রক্তচাপ কমায়। তবে কিছু গাঁজানো খাবারে প্রচুর লবণ থাকে যা আবার ক্ষতিকর। তাই লবণ কম এমন গাঁজানো খাবার খেতে হবে।