দ্রুত মশক নিধনসহ নাগরিকদের উন্নত সেবা দিতে মোটরসাইকেলে মশক নিধন যন্ত্র স্থাপনসহ বিভিন্ন স্বয়ংক্রিয় যন্ত্রপাতি ক্রয় করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম। রবিবার রাজধানীর উত্তরা ১০ নম্বর সেক্টরের সানবীম স্কুলে বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর (বিএনসিসি) আয়োজিত পরিচ্ছন্ন অভিযান উদ্বোধনকালে তিনি এ কথা বলেন। অপরদিকে ডেঙ্গু মোকাবেলায় নগর কর্তৃপক্ষ তার সর্বশক্তি দিয়ে মাঠে আছে। তবে ডেঙ্গু থেকে বাঁচতে সচেতনতার জন্য নাগরিকদের লম্বা প্যান্ট, পায়জামা, মোজা পরে নিরাপদে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন ও সেপ্টেম্বরের পহেলা সপ্তাহের মধ্যে ডেঙ্গুকে নিয়ন্ত্রণে আনার সর্বাত্মক চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন। এছাড়া, ডেঙ্গু পরিস্থিতি মোকাবেলায় এডিস মশার লার্ভা ধ্বংসে প্রতিদিন ৬০টি বাড়িতে ডিএসসিসির টিম যাবে বলেও জানান তিনি। রবিবার দুপুরে নগর ভবনে ডিএসসিসি কর্তৃক আয়োজিত কোরবানির বর্জ্য সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও ডেঙ্গু প্রতিরোধের লক্ষ্যে মসজিদের খতিব ও ইমামদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা এবং এ্যারোসেল স্প্রে বিতরণ কর্মসূচীতে সাঈদ খোকন এসব কথা বলেন।
উত্তরার বিএনসিসির ক্যাডেটদের অনুষ্ঠানে মেয়র আতিক বলেন, শুধু সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্নতা কর্মী দিয়েই নগর পরিচ্ছন্ন রাখা সম্ভব নয়। এ জন্য সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। ডেঙ্গু নির্মূল করতে হলে অবশ্যই তিন দিনের বেশি পরিষ্কার পানি কোথাও জমতে দেয়া যাবে না। তিনি বলেন, ডিএনসিসির জনবল বাড়ছে, সঙ্গে সঙ্গে নাগরিকদের সচেতন হতে হবে। যথাস্থানে ময়লা ফেলার অভ্যাস করতে হবে। নিজ নিজ আবাসস্থল, এলাকা, এলাকার জলাধার নিজেদের পরিষ্কার রাখতে হবে। অনুষ্ঠানে বিএনসিসির মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুল বাতেন খান, ডিএনসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোমিনুর রহমান মামুন, ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ আফসার উদ্দিন খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। ডিএনসিসি মেয়র বলেন, যেখানেই অপরিচ্ছন্নতা, নাগরিক স্বাস্থ্যের জন্য হুমকিস্বরূপ এবং এডিস মশার বংশবিস্তার সহায়ক পরিবেশ পাওয়া যাবে সেখানেই জরিমানা ও আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। আধুনিক ও উন্নত বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য ডিএনসিসি সচেষ্ট রয়েছে। নাগরিকদের দ্রুত ও উন্নত সেবা দিতে ডিএনসিসি বিভিন্ন স্বয়ংক্রিয় যন্ত্রপাতি ক্রয় করছে। আমরা ইতোমধ্যে মোটরসাইকেলে মশক নিধন যন্ত্র স্থাপন করে দ্রুততম সময়ে অধিক এলাকায় মশার ওষুধ প্রয়োগ করছি। এতে সময় ও লোকবল দুটিই সাশ্রয় হচ্ছে। আমরা বিভিন্ন দফতর, স্থাপনা, বাসা-বাড়ি পরিদর্শন করছি, আমাদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরাও তৎপর রয়েছেন।
বিএনসিসি ক্যাডেটদের উদ্দেশে মেয়র বলেন, আমাদের সুনাগরিক হতে হবে। একজন সুনাগরিক কখনও রাষ্ট্রের ক্ষতি করে না, যত্রতত্র ময়লা-আবর্জনা ফেলে না, ভূমি দখল করে না, নদী-খাল দখল করে না। তিনি বলেন, আমি নিজেও ছাত্রজীবনে বিএনসিসি ক্যাডেট ছিলাম। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি বিএনসিসির ক্যাডেটরা তাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করবে। পরে মেয়র বিএনসিসি কর্তৃক উত্তরা ১০ ও ১১ নম্বর সেক্টরের মাঝের খাল পরিষ্কার কাজ পরিদর্শন করেন।
এদিকে রবিবার দুপুরে ডিএসসিসির নগর ভবনের অনুষ্ঠানে মেয়র সাঈদ খোকন বলেন, ছোট ছোট সচেতনতার মধ্য দিয়ে রাজধানীকে ডেঙ্গুমুক্ত করা সম্ভব। নাগরিকদের ডেঙ্গু থেকে রক্ষার জন্য পরামর্শ দিয়ে মেয়র বলেন, আপনারা যারা লম্বা প্যান্ট, পায়জামা পরেন, পাজামার সঙ্গে মোজা পরলে আমরা কিন্তু নিরাপদ থাকতে পারি। বাসায় যারা থাকবেন, তাদের লম্বা জামা পরতে বলবেন। এই ছোট ছোট সচেতনতা আমাদের উপকার করবে এবং ডেঙ্গু মসিবত থেকে রক্ষা করবে ইনশাআল্লাহ। অনুষ্ঠানে মেয়র বলেন, ডেঙ্গু মোকাবেলায় নগর কর্তৃপক্ষ তার সর্বশক্তি দিয়ে মাঠে আছে। আমাদের জনগণ এক মাস আগেও সচেতন ও সতর্ক ছিল না, তবে এখন ডেঙ্গু নিয়ে সবাই মোটামুটি সচেতন। আপনাদের সচেতনতা ও আমাদের প্রচেষ্টা এই দুইয়ের সমন্বিত উদ্যোগে আমরা ডেঙ্গুকে মোকাবেলা করব। মেয়র বলেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধে প্রতিদিন কমপক্ষে ৩০টি বাসায় আমাদের ইন্সপেকশন টিম যাচ্ছে, এডিস মশার লার্ভা নষ্ট করছে। ইতোমধ্যে ১৫ হাজার বাসা ছাড়িয়ে গেছে। কাল পরশু থেকে প্রতিদিন কমপক্ষে ৬০টি বাসা প্রতিটি ওয়ার্ডে ৩৪৮০টি বাসা ইন্সপেকশন করে এডিস মশার লার্ভা নষ্ট করা হবে।