ডেঙ্গুর সময় রোগীর খাবার নির্বাচনে বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে। রোগীর খাবার হতে হবে তরল ও সহজপাচ্য। এ সময় যেসব খাবার খেতে হবে তা হলো :
কার্বোহাইড্রেট জাতীয়
আতপ চালের নরম ভাত বা জাউ, সিদ্ধ আটার রুটি, পাতলা খিচুড়ি ইত্যাদি খাবার রোগীকে দেওয়া যেতে পারে, যাতে শরীরে শক্তি বজায় থাকে। পাশাপাশি দেওয়া যেতে পারে দেশি মুরগির মাংস, যা সহজে হজম হয়।
পানি ও তরলজাতীয়
খাবার পানি : জ্বরের সময় দেহে পানির সমতা বজায় রাখার জন্য পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে। পানি দেহ থেকে দূষিত বর্জ্য পদার্থ বের করে দিতে এবং শরীরের আর্দ্রতা বজায় রাখতে সাহায্য করে।
ডাবের পানি : ডাব খুব চমৎকার শক্তিবর্ধক পানীয়। এতে প্রচুর পরিমাণ পটাসিয়াম, ক্যালসিয়াম, সোডিয়াম, ফসফরাস এবং আয়রন রয়েছে। দেহের স্নায়বিক জটিলতা, অন্ত্রের তারল্য ও কোষের জলীয় শোষণের সমতা বজায় রাখতে এর জুড়ি নেই।
শাকসবজির স্যুপ : লাউ, ঝিঙা, পটোল, গাজর, অঙ্কুরিত ছোলা, পালং শাক, মিষ্টি কুমড়া ইত্যাদি সবজির স্যুপ রোগীকে দেওয়া যেতে পারে। খেতে পারে কাঁচা পেঁপে, গাজর, পটোলের স্যুপ, চিকেন ক্লিয়ার স্যুপ বা চিকেন স্যুপ, রসুন স্যুপ ইত্যাদি। এসব খাবারে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন, খনিজ লবণ, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং জলীয় উপাদান থাকে, যা সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করে রোগ প্রতিহত করতে, অস্থির সন্ধিস্থলে ব্যথা রোধ করতে সাহায্য করে। স্যুপজাতীয় খাবারে মসলা কম থাকায় সহজে হজমও হয়।
ফলমূল
ভিটামিন ‘সি’ জাতীয় : লেবু, পেয়ারা, আনারস, কমলা, জাম্বুরা ইত্যাদি ফলে যথেষ্ট পরিমাণে ভিটামিন ‘সি’, খনিজ লবণ এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকে। এসব খাবার মানবদেহে কোলাজন তৈরিতে এবং রোগ প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে। এতে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট রক্ত সঞ্চালন ভালো রাখতে এবং ভাইরাল সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে। তাই ডেঙ্গুতে প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় অবশ্যই ফলের রস রাখা উচিত।
আমলকী ও বেদানা : এই দুটি ফলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। এটিও রক্তে প্লাটিলেট বাড়াতে সাহায্য করে।
প্রতিদিন চার-পাঁচটি আমলকী + ৩ টে. চামচ বেদানা + ১ গ্লাস পানি দিয়ে ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে দিনে দু-তিনবার পান করলে ভালো ফল পাওয়া যায়।
পরিহার করতে হবে
অতিরিক্ত তৈলাক্ত বা মসলাযুক্ত খাবার, প্রক্রিয়াজাত খাবার, কোমল পানীয়।
লেখক: মাহবুবা চৌধুরী, পুষ্টিবিদ, ডায়েট প্লানেট বাংলাদেশ
সূত্র কালের কণ্ঠ