ডেঙ্গু জ্বরে শনিবার দিবাগত রাত থেকে রোববার রাত ১২টা পর্যন্ত আরও ৬ জন মারা গেছেন। এর মধ্যে রোববার দুপুরে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে মারা গেছেন পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক শাহাবুদ্দীন কোরেসীর স্ত্রী সৈয়দা আক্তার (৫৪)। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন একজন। বাকি ৪ জনের মধ্যে দুজন ঢাকায় ও দুজন ঢাকার বাইরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।
এ নিয়ে এ বছর ডেঙ্গুতে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়াল ৮৫। সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা ও পরিবারের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে মৃত্যুর এই হিসাব পাওয়া গেছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশনস সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম বলছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে নতুন ভর্তি হয়েছেন ১ হাজার ৮৭০ জন।
ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে দীপালি আকতার (২৩) মারা গেছেন। রোববার বিকেল ৩টা ১৮ মিনিটে হাসপাতালের এইচডিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। দীপালি নরসিংদী জেলার মনোহরদী উপজেলার রিয়াজ উদ্দিনের মেয়ে। তিনি স্নাতক শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন। স্বামীর সঙ্গে রাজধানীর বনশ্রী এলাকায় থাকতেন দীপালি। তাঁর স্বামীর নাম মো. কামাল হোসেন।
পুলিশ সূত্র জানায়, গত ৩০ জুলাই অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক শাহাবুদ্দীন কোরেসীর স্ত্রী সৈয়দা আক্তার ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে রাজারবাগ পুলিশ লাইনস হাসপাতালে ভর্তি হন। অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে শনিবার স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গতকাল সকাল সাড়ে ১১টার দিকে স্কয়ার হাসপাতালের চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
শনিবার রাতে শমরিতা হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) মারা যান লাভলী বাশার (৩২)। তিনি চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলার খাদেরগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের মহিলা সদস্য। লাভলীর স্বামী আবুল বাশার জানান, লাভলী বৃহস্পতিবার দুপুরে জ্বরে আক্রান্ত হন। ওই দিন বিকেলে চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হলে ডেঙ্গু শনাক্ত হয় তাঁর। অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় শনিবার ঢাকায় বেসরকারি হাসপাতাল শমরিতায় ভর্তি করা হয়।
খুলনায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় ডেঙ্গু আক্রান্ত দুজনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন সিভিল সার্জন মো. আতিয়ার রহমান শেখ। এর মধ্যে শনিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা গেছেন মর্জিনা বেগম (৬৫)। মর্জিনার দেবরের ছেলে মামুন রেজা প্রথম আলোকে বলেন, মর্জিনা ঢাকায় গিয়ে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছিলেন।
খুলনার রূপসা উপজেলার কাজদিয়া সরকারি উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র মঞ্জুর শেখ গত বুধবার জ্বরে আক্রান্ত হয়। জ্বর না কমায় পরদিন স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে ঢাকায় নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হলেও পরিস্থিতি খারাপ দেখে স্থানীয় বেসরকারি হাসপাতাল গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। সেখানে সে মারা যায়।
রোববার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে ঢাকার জিগাতলার জাপান-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতালে মারা গেছেন শান্তা (২০) নামের এক তরুণী। এ হাসপাতালের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সামিউল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ডেঙ্গুতে গুরুতর অসুস্থতা নিয়ে ভর্তির ২২ ঘণ্টা পর মারা যান শান্তা।
সূত্রঃ প্রথম আলো