শিশুর শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য গঠনে মায়ের বুকের দুধের ভূমিকা

মায়ের বুকের দুধ শিশুর শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য গঠনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এটা আরও বেশি কার্যকর হয় যদি মায়ের দুধ পান নিয়মিত এবং বাধাহীন হয়ে থাকে। 

মায়ের দুধে শিশুর প্রয়োজনীয় সব ধরনের পুষ্টি উপাদান সঠিক মাত্রায় থাকে। এ ছাড়া মায়ের দুধে আছে শতকরা ৯০ ভাগ পানি। সে জন্য ৬ মাস বয়স পর্যন্ত শুধু বুকের দুধই শিশুর জন্য যথেষ্ট। এমনকি শিশুকে ৬ মাস বয়স পর্যন্ত আলাদা পানি পান করতে দেওয়ারও প্রয়োজন নেই।

মায়ের দুধের অ্যান্টিবডি শিশুর প্রথম টিকা হিসেবে কাজ করে। শিশুর দেহের রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থা দ্রুত কার্যকর করে তোলে। শিশুকে ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, শ্বাসনালির রোগ, হাঁপানি, অ্যালার্জি প্রভৃতি রোগ থেকে সুরক্ষিত রাখে। দাঁত ও মাড়ির রোগ থেকে শিশুকে কার্যকরভাবে রক্ষা করে। মায়ের দুধে পূর্ণমাত্রায় ভিটামিন ‘এ’ থাকে বলে তা শিশুর অস্থির রোগ রিকেট প্রতিরোধ করে। এ ছাড়া শিশু অসুস্থ হলেও তাড়াতাড়ি ভালো হয়ে যায়। মায়ের দুধ পান শিশু মৃত্যুর হারও কমিয়ে দেয়। পরে শিশুর ক্যানসার, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ইত্যাদি ভয়াবহ রোগ হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কমে যায়।

শিশুর স্বাভাবিক মানসিক বিকাশেও মায়ের দুধের রয়েছে কার্যকর ভূমিকা। দীর্ঘদিনের গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব শিশু গুঁড়া দুধ খায় তাদের তুলনায় মায়ের দুধ যারা খায় তাদের বুদ্ধির বিকাশ তুলনামূলকভাবে বেশি হয়। প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান থাকার কারণে এটি শিশুর মস্তিষ্ক বৃদ্ধিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকে রাখে। এ ছাড়া মাতৃদুগ্ধ পান মা ও শিশুর আত্মিক বন্ধন দৃঢ় করে।

লেখক: আবাসিক চিকিৎসক, প্যাথলজি বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়।

সুত্রঃ প্রথম আলো

About Post Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *