উচ্চ আদালতের নির্দেশে পাস্তুরিত দুধ নিয়ে বিসিএসআইআরের দাখিল করা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাজারে থাকা ১৪ প্রতিষ্ঠানের পাস্তুরিত দুধের মধ্যে ১১টিতেই ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া রয়েছে। কয়েকটিতে পাওয়া গেছে অ্যান্টিবায়োটিক। দাখিল করা প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, অধিকাংশ পাস্তুরিত দুধের কোম্পানি আইএসও স্ট্যান্ডার্ড না মেনেই বাজারজাত করছে। এ ছাড়া জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তর তাদের প্রতিবেদনে বলেছে, ১৪টির মধ্যে ৯টিতে মিলেছে কলিফর্ম। কিছু কিছু দুধের নমুনায় পাওয়া গেছে ফরমালডিহাইড ও অক্সিটেট্রাসাইক্লিন।
বিএসটিআইর অনুমোদিত কোম্পানির পাস্তুরিত দুধের নমুনা পরীক্ষার পর তিনটি প্রতিবেদন মঙ্গলবার আদালতে দাখিল করা হয়। আগামী রোববার এসব প্রতিবেদনের ওপর শুনানি হবে। বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের হাইকোর্ট বেঞ্চ বুধবার এই তারিখ নির্ধারণ করেন।
প্রতিবেদন তিনটি দাখিল করে বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ (বিসিএসআইআর), আইসিডিডিআর,বি ও বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট (সাভার)। তবে জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের ন্যাশনাল ফুড সেফটি ল্যাবরেটরির প্রতিবেদন আদালতে এখনও জমা হয়নি।
আদালতে শুনানিতে বিএসটিআইর পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার সরকার এম আর হাসান। রিটের পক্ষে ছিলেন রিটকারী ব্যারিস্টার অনিক আর হক ও আইনজীবী মো. তানভীর আহমেদ।
বাজারের অধিকাংশ পাস্তুরিত দুধে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া আছে— গত ২৫ জুন এমন প্রতিবেদন প্রকাশ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োমেডিক্যাল রিসার্চ সেন্টারের অধ্যাপক আ ব ম ফারুক। এ নিয়ে শুরু হয় বিতর্ক। এ প্রতিবেদন প্রকাশের পর আ ব ম ফারুকের ওপর ক্ষুব্ধ হন দুধ ব্যবসায়ীরা। এরপর গত ১৩ জুলাই ফের দুধ পরীক্ষা করে অধ্যাপক ফারুক জানান, অধিকাংশ পাস্তুরিত দুধেই অ্যান্টিবায়োটিক ও ডিটারজেন্টের উপস্থিতি রয়েছে।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে গত ১৪ জুলাই বিএসটিআই অনুমোদিত কোম্পানির পাস্তুরিত দুধের নমুনা পরীক্ষা করে চারটি ল্যাব প্রতিষ্ঠানকে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
পাস্তুরিত দুধ নিয়ে ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ডায়রিয়াল ডিজিস রিসার্চ বাংলাদেশের (আইসিডিডিআর,বি) গবেষণা প্রতিবেদন বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, বাজারে থাকা ৭৫ শতাংশ পাস্তুরিত দুধেই ভেজাল ধরা পড়ছে, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি। এই প্রতিবেদন যুক্ত করে রিট আবেদন করেন আইনজীবী তানভীর আহমেদ।
সূত্রঃ সমকাল