চট্টগ্রাম মহানগরে গত ১ থেকে ২১ জুলাই পর্যন্ত ১৯ ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। এর আগে জুন ও ফ্রেব্রুয়ারি মাসে একজন করে ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত করা হয়েছিল। আক্রান্তরা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং বেসরকারি বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণ করে বাড়ি ফিরেছেন বলে সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়।
রাজধানী ঢাকার পর এবার চট্টগ্রামেও ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা দিয়েছে। তবে ডেঙ্গুর প্রকোপ ঠেকাতে চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন এর্ব চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। দুই সংস্থারই প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি রয়েছে বলে জানা যায়। সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা দেওয়ায় চট্টগ্রাম নগরের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা চিহ্নিত ও মশাবাহিত রোগ থেকে বাসিন্দাদের মুক্ত রাখতে মশার ওপর জরিপ কার্যক্রম পরিচালনা করবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। আগামী মাস থেকে জরিপ কাজ শুরুর কথা রয়েছে। জরিপে কোন কোন এলাকায় ঝুকিপূর্ণ সেটি বের করা হবে। এরপর সিটি কর্পোরেশন সে অনুযায়ী মশক নিধন কার্যক্রম পরিচালনা করবে। এর আগে ২০১৭ সালে মশার ওপর জরিপ কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়েছিল। একই সঙ্গে উপজেলা পর্যায়ে তদারকি করতে ১৫টি উপজেলায় খুলা হয়েছে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ। নগরে অবস্থিত ৯টি আরবান ডিসপেনসারিতেও ডেঙ্গু নিয়ে বিশেষ সতর্কতার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সিভিল সার্জন ডা. আজিজুর রহমান সিদ্দিকী বলেন, ‘মশার উপদ্রব বেড়ে যাওয়ায় ঢাকার পাশাপাশি চট্টগ্রামেও জরিপ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখা। জরিপে কোন প্রজাতির মশার উপদ্রব বেশি তা নির্ণয় করা হবে। বিশেষ করে এডিস মশার উপদ্রব জানতে এ কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। ঢাকা থেকে টিম এসে এ জরিপ কার্যক্রম তদারকি করবে। মশার উপদ্রব বৃদ্ধি পাওয়ায় মশাবাহিত রোগও বাড়ছে। এর অংশ হিসেবে মশার ওপর জরিপ কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।’
জানা যায়, নগরের ৪১টি ওয়ার্ডে একটি করে এলাকা চিহ্নিত করা হবে। প্রতি এলাকায় ১০টি বাড়িতে টিম যাবে। প্রতি টিমে কীটতত্ত্ববিদ, কীট টেকনিশিয়ান ও তথ্য সংগ্রহকারী থাকবে। তারা বাড়ি বাড়ি গিয়ে মশার লার্ভা সংগ্রহ করবে। একই সঙ্গে বাড়িতে পরিত্যক্ত অবস্থায় কৌটা, খালি টিন, টায়ার পড়ে আছে কিনা তাও দেখবে। জরিপে এডিস মশার লার্ভা সংগ্রহের পাশাপাশি কিউলেক্স ও এনোফিলিস মশার লার্ভাও সংগ্রহ করা হবে।
এদিকে, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) ৪১টি ওয়ার্ডে চিকুনগুনিয়া ও ডেঙ্গু প্রতিরোধে বিশেষ ক্র্যাশ প্রোগ্রাম শুরু করেছে। মশক নিধনে এবার ২ কোটি টাকার ২৫ হাজার লিটার এডাল্টিসাইড, ১০ হাজার লিটার লার্ভিসাইড ছিটানো হচ্ছে।
চসিকের প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা ডেঙ্গু প্রতিরোধে মশক নিধন কার্যক্রম চলছে। ইতোমধ্যে সতর্কতা ও সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ এবং পত্রিকায় গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে।