রাজধানী থেকে এডিস মশা নিধনে ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই কার্যকরী ব্যবস্থা নিতে আদালতের নির্দেশের পর বেশ নড়েচড়ে বসেছে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষ। এডিস মশা নিধনে ঢাকা উত্তরের মেয়র আতিকুল ইসলাম মশার বর্তমান ওষুধ পাল্টানো, মশার ওষুধ নির্বাচন ও কার্যকারিতা পরীক্ষায় ১০ সদস্যের কারিগরি কমিটি গঠন করা, অতি দ্রুত হটলাইন চালুর পরিকল্পনা, চলমান মশক নিধন প্রোগ্রাম আরও জোরদার করা, জনসচেতনতা বাড়াতে স্থানীয় এমপি মন্ত্রী ও ওয়ার্ড কমিশনারসহ সমাজের সকলকে নিয়ে র্যালি সমাবেশ করা, মশার উৎপত্তিস্থল ধ্বংস করতে বিশেষ নির্দেশনা, প্রতিটি বাড়িতে গিয়ে ওষুধ ছিটানোর অনুমতি দেয়ার জন্য নাগরিকদের প্রতি বিশেষ আহ্বান, মশক নিধনে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণসহ নিয়েছেন নানা উদ্যোগ। অপরদিকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি) রোগীর তাৎক্ষণিক সেবায় হটলাইন চালু, বিশেষ প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা পক্ষ উদ্বোধন, কল করলেই ডাক্তার রোগীর বাড়িতে চলে যাওয়ার ব্যবস্থা, ৬৮টি মেডিক্যাল টিম গঠন, ৪শ’ ৭৬টি স্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে বিনামূল্যে ওষুধের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া কোন রোগী ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হলে ডিএসসিসির ডাক্তারদের পরামর্শে সিটি কর্পোরেশনের হাসপাতালে ভর্তি ও চিকিৎসা করা, ১ জুলাই থেকে মশার ওষুধ ছিটানোর উদ্যোগ আরও গুরুত্বসহকারে বাস্তবায়নের নির্দেশ দিয়েছে সংস্থাটি। একইসঙ্গে বাড়ির ভেতরে গিয়ে মশার ওষুধ ছিটাতে মশক নিধন কর্মীদের ঘরে যাওয়ার অনুমতি দেয়ার জন্য সকল নাগরিকের প্রতি আহ্বান জানান মেয়র। ডিএসসিসির মেয়র সাঈদ খোকনের বিশেষ নির্দেশে এসব উদ্যোগ নিয়েছে সংস্থাটির স্বাস্থ্য শাখার দায়িত্বপ্রাপ্তরা।
সোমবার দুপুরে ডিএসসিসি নগর ভবনে বিশেষ প্রাথমিক চিকিৎসাসেবা পক্ষ-২০১৯ উদ্বোধন করেন মেয়র সাঈদ খোকন। এ সময় তিনি বলেন, আমার এলাকায় কেউ ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হটলাইন নাম্বরে (০৯৬১১০০০৯৯৯) ফোন করলে সঙ্গেই সঙ্গেই স্বাস্থ্যকর্মীরা ফোনকারীর বাসায় পৌঁছে যাবেন। একইসঙ্গে বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা ও ওষুধ দেবেন। একইসঙ্গে শুধু ডেঙ্গু রোগী নয় আবহাওয়াজনিত রোগ সর্দি-জ্বরেরও প্রাথমিক চিকিৎসা দেবে ডিএসসিসির মেডিক্যাল টিম। তাই নাগরিকদের আতঙ্কিত না হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন মেয়র। এ সময় ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শরীফ আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সাঈদ খোকন বলেন, যারা ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন তাদের জন্য আমরা বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে ৬৮টি মেডিক্যাল টিম গঠন করেছি। এ মেডিক্যাল টিম আমাদের ৪শ’ ৭৬টি কেন্দ্রে বিনামূল্যে ওষুধ প্রদান করবে। যদি আমাদের স্বাস্থ্যকর্মীরা মনে করেন, কোন রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে হবে, তাহলে আমাদের মহানগর জেনারেল হাসপাতাল ও শিশু হাসপাতালে তাদের বিনামূল্যে ভর্তি করা হবে। মেয়র বলেন, ডিএসসিসি এলাকায় ডেঙ্গুর যে প্রাদুর্ভাব, সেটি গত দুই-তিন বছরের তুলনায় এবার কিছুটা বেড়েছে। কিন্তু আতঙ্কিত হওয়ার মতো কোন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়নি। তাই আতঙ্কিত বা ঘাবড়ে যাওয়ারও কোন কারণ নেই। আমরা বিশেষজ্ঞদের নিয়ে যে সেমিনার করেছি সেখানে তারা আমাদের জানিয়েছেন শতকরা ৯৭ থেকে ৯৯ ভাগ রোগী সামান্য জ্বরে আক্রান্ত হয় এবং ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে তা সেরে যায়। তাই নাগরিকদের বলবো, আপনারা সচেতন থাকবেন। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সর্বোচ্চ শক্তি নিয়োগ করা হয়েছে।