ফিনল্যান্ডের গবেষকদের আবিষ্কারঃ বিদ্যুত পানি ও বাতাসের সংমিশ্রণে খাবার

জলবায়ু পরিবর্তন, সমুদ্রের উচ্চতা বৃদ্ধি ও বড় ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে যদি মানুষের খাদ্য উৎপাদন কমে যায়- তাহলে কি হবে? বিজ্ঞানীরা দীর্ঘদিন থেকেই এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছিলেন। অবশেষে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার মহাকাশচারীদের জন্য খাবার তৈরির এক ধারণা থেকে ফিনল্যান্ডের প্রখ্যাত প্রযুক্তি বিষয়ক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ভিটিটি বিদ্যুত, পানি ও বাতাসের সংমিশ্রণে এক প্রকার খাবার তৈরি করেছে। খাবারটির নাম দেয়া হয়েছে সোলেইন।

এই খাবার তৈরির পাইলট প্রকল্প হিসেবে ফিলন্যান্ডের দক্ষিণপূর্বাঞ্চলীয় লাপ্পেনরান্টা এলাকায় একটি কারখানা তেরি করেছে ভিটিটি। এই খাবার তৈরির জন্য প্রথমে পানির ভেতর বিদ্যুত দিয়ে এক ধরনের বুদবুদ তৈরি করা হয়। এরপর এই বুদবুদের সঙ্গে বায়ু থেকে কার্বন ডাই-অক্সাইড ও হাইড্রোজেন যোগ করে এক ধরনের অনুজীবে রূপান্তর করার পর এই অনুজীব গাজন প্রক্রিয়ার সাহায্যে শুকনো খাবারে পরিণত করা হয়েছে। গবেষকরা দাবি করেছেন, সোলেইনের মধ্যে যে আমিষ রয়েছে তা শতভাগ পরিবেশবান্ধব ও স্বাস্থ্যসম্মত। এই খাবারের স্বাদ অনেকটা গমের আটার মতো । এটির রংও আটার মতোই। যারা স্বাস্থ্য ছিমছাম রাখতে প্রতিনিয়ত ডায়েট করছেন তাদের জন্য এই খাবার অত্যন্ত উপকারী হতে পারে বলে গবেষকরা জানিয়েছেন।

গবেষণা দলের সদস্য ও ভিটিটি কোম্পানির প্রধান নির্বাহী ডক্টর পাসি বিনায়ক বলেন, সোলেইন নতুন ধরনের খাবার এবং আমিষের বড় উৎস হতে পারে। বর্তমান বাজারে যে সকল খাবার ও আমিষ রয়েছে তার থেকে সোলেইন ভিন্ন ধরনের। এই খাবার তৈরির জন্য কৃষি কাজ ও একুয়াকালচারের প্রয়োজন নেই। এটি মানুষের খাদ্য চাহিদার একটি সমন্বিত সমাধান হতে পারে। পাশাপাশি সোলেইন ভবিষ্যতের প্রধান খাবার ও আগামী দিনের জন্য খাবারের একটি প্রধান উৎস হতে পারে বলে আমাদের ধারণা। তিনি বলেন আরও বলেন, এই খাবারে আমিষের পাশাপাশি প্রয়োজনীয় এ্যামাইনো এসিড ও অন্যান্য উপাদান রয়েছে। এ্যামাইনো এসিড সমৃদ্ধ খাবার উৎপাদনে প্রচুর জমির দরকার হয়। তবে সোলেইন তৈরির জন্য এই এ্যামাইনো এসিড চিনির সহযোগ ছাড়া শুধুমাত্র বাতাস থেকে নেয়া হয়।

ডক্টর পাসি বিনায়ক আরও বলেন, প্রোটিনের জন্য আমরা সাধারণত ডিমের এ্যালবুমিন ও দুধের দারস্থ হই। এসব উৎপাদনের জন্য অতিরিক্ত জমি, শ্রম, পানি ও অর্থের দরকার হয়। এই খাবারে এসব উপাদান আমরা অত্যন্ত সহজে কার্বন ডাই-অক্সাইড থেকে নিয়েছি। আপাতত মহাকাশ বিজ্ঞানীদের জন্য এই খাবার তৈরি করা হয়েছে। পাশাপাশি ২০২১ সালের মধ্যে সোলেইন তৈরির জন্য আলাদা একটি কারখানা তৈরি করবে ভিটিটি। -ইয়াহু নিউজ

About Post Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *