বিশ্বের বৃহত্তম ‘শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট’এর চিকিৎসাসেবা কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর চানখারপুল এলাকায় ১৩ তলা বিশিষ্ট এই বিশেষায়িত ইনস্টিটিউটের সেবা কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক। এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ ইনস্টিটিউটের উদ্বোধন করেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ম্যুরালে পুষ্পস্তবক দেওয়ার মাধ্যমে হাসপাতালের সেবা কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়।
এরপর হাসপাতালের সেবা কার্যক্রম ও বিভিন্ন বিভাগগুলো পরিদর্শন করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। পরিদর্শন শেষে একটি উদ্বোধনী আলোচনা অনুষ্ঠানে অংশ নেন তিনি। আলোচনায় দেশের মঙ্গল কামনা করে মোনাজাত করা হয়।
উদ্বোধনকালে মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব আসাদুল ইসলামসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আনুষ্ঠানিকভাবে হাসপাতালের উদ্বোধন হলেও আরও তিন দিন আগেই পরীক্ষামূলকভাবে এখানকার সেবা কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে।
জানা গেছে, এই হাসপাতালে রোগীর চিকিৎসার জন্য রয়েছে ৫০০ শয্যা। এ ছাড়া গুরুতর অসুস্থ রোগীদের চিকিৎসার জন্য ইন্টেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) ২২টি শয্যা রয়েছে। রোগীর উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত করার জন্য ২২ শয্যা বিশিষ্ট হাই ডেফিসিয়েন্সি ইউনিট (এইচডিইউ), ১২টি অপারেশন থিয়েটার এবং একটি অত্যাধুনিক পোস্ট অপারেটিভ ওয়ার্ড আছে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে জরুরি চিকিৎসার প্রয়োজনে রোগী নিয়ে আসার জন্য ভবনের ছাদে হেলিপ্যাড সুবিধা রাখা হয়েছে। হাসপাতালের পার্কিংয়ে একসঙ্গে ১৮০টি গাড়ি রাখার ব্যবস্থা থাকবে।
২০১৫ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় প্লাস্টিক সার্জারি বিষয়ক এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে আন্তর্জাতিক মানের একটি বার্ণ ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট স্থাপনের ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
২০১৫ সালের নবেম্বরে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এই ইনস্টিটিউটের অনুমোদন দেওয়া হয়। ২০১৬ সালের ৬ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চাঁনখারপুলে এই ইনস্টিটিউটের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ২৭ এপ্রিল বাংলদেশ সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোর এর নির্মাণ কাজ শুরু করে।
১৯৮৬ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের একটি ওয়ার্ডে ছয়টি বেড নিয়ে বার্ন বিভাগ চালু করেন দেশের প্রথম প্লাস্টিক সার্জন অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ। অধ্যাপক ডা. সামন্ত লালের প্রচেষ্টায় ২০০৩ সালে সেটি ৫০ বেডের পূর্ণাঙ্গ ইউনিট হিসেবে কাজ শুরু করে। ২০১০ সালের ৩ জুন পুরান ঢাকার নিমতলীতে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে ১২৭ জনের মৃত্যুর পর বার্ন ইউনিটের সক্ষমতা আরও বাড়ানোর বিষয়টি গুরুত্ব পায়। এ ইউনিটের বেড বেড়ে প্রথমে ১শ’ ও পরে ৩শ’ হয়।