এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু রোগ প্রতিরোধ ও দমনে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় সচেতনতামূলক সভা, মাইকিং ও মশার ওষুধ ছিটানো হলেও কমছে না ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। স্কুল শিশু থেকে শুরু করে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছে।
চিকিৎসা পেশার সঙ্গে জড়িত চিকিৎসকও ডেঙ্গুর থাবা থেকে রক্ষা পাচ্ছেন না। গত বুধবার রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নিগার নাহিদ দিপু নামে এক নারী চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে। মাত্র দুদিনের জ্বরে ডেঙ্গু শক সিনড্রোমে চলে গেলেন ডা. নিগার।
চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিন তিনবার হার্ট অ্যাটাক হয় তার। নিগারের স্বামীও পেশায় চিকিৎসক। রাজধানীর পপুলার ও স্কয়ার হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসা দিয়েও শেষ পর্যন্ত তাকে বাঁচানো যায়নি।
দেশের প্রখ্যাত মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. এবিএম আবদুল্লাহসহ ডেঙ্গু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গুর ধরন পাল্টেছে। ফলে এক-দুদিনের জ্বরেও রোগীর মৃত্যু হতে পারে। ডা. নিগারের মৃত্যুর মধ্যে দিয়ে এ আশঙ্কা আরও একবার প্রমাণিত হলো। ফলে সাধারণ মানুষের মধ্যে ডেঙ্গু আতঙ্ক কাটছে না।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার অ্যান্ড কন্ট্রোল রুমের তথ্যানুসারে, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে আজ ৩ জুলাই পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল এবং ক্লিনিকে শুধু ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ২ হাজার ২৭৭। এর মধ্যে জানুয়ারিতে ৩৮ জন, ফেব্রুয়ারিতে ১৮, মার্চে ১৭, এপ্রিলে ৫৮, মে মাসে ১৯৩, জুনে ১ হাজার ৬৯৯ ও চলতি মাসের প্রথম তিনদিনে ২৫৪ জন রোগী ভর্তি হন। গত ২৪ ঘণ্টায় বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৮৩।
বর্তমানে রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি ৩৩৬ জন। ভর্তি রোগীদের মধ্যে এপ্রিলে দুজন ও আজ বুধবার একজনসহ মোট তিনজনের মৃত্যু হলো।
চিকিৎসকরা বলছেন, সরকারি হিসাবে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ২ হাজার ২৭৭ বলা হলেও প্রকৃত সংখ্যা আরও অনেক বেশি। সরকারি হিসাবে বিভিন্ন সরকারি, বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চিকিৎসকের প্রাইভেট চেম্বারে আসা রোগীর তথ্য নেই।
সূত্রঃ জাগোনিউজ