ডেঙ্গু আগেও ছিল, এখনো আছে। তাই ডেঙ্গু জ্বরকে ভয় না পেয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি আর প্রতিরোধ করেই চলতে হবে। ডেঙ্গু নিয়ে উৎকণ্ঠার প্রয়োজন নেই। নিতে হবে সতর্কতা ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা। মূলত ডেঙ্গু ভাইরাসের কারণে রক্তনালিতে প্রদাহের সৃষ্টি (ভাসকুলাইটিস) হয়। ফলে রক্তনালির ভিতর থেকে তরল পদার্থ রক্তনালির বাইরে লিক করে বেরিয়ে আসে। এ কারণে ত্বকের নিচে রক্ত জমে ত্বক ফুলে ওঠে এবং লালাভ চাকার মতো দেখা যায়। একই সঙ্গে রক্তে প্লাটিলেট কাউন্ট কমে গিয়ে রক্তক্ষরণের প্রবণতা বেড়ে যায়। ক্লাসিক্যাল ডেঙ্গু জ্বর গুরুতর কোনো সমস্যা নয়। বমি, পেটব্যথা ও মাথাব্যথা, কোমর ব্যথা, অস্থিসন্ধি বা জয়েন্টে ব্যথা, চোখের পেছনে ব্যথা। প্রচ- হাড় ব্যথার ফলে মনে হয় হাড় ভেঙে গেছে। এ কারণে এই জ্বরকে ‘ব্রেক বোন ফিভার’ বলা হয়ে থাকে। এই জ্বরে আক্রান্ত শিশুকে ধরলে বা নাড়াচাড়া করলেই শিশু কেঁদে ওঠে, খিটখিটে মেজাজের হয়ে যায়। ডেঙ্গু জ্বরে সারা শরীর বিশেষ করে হাড়ে খুব ব্যথা অনুভূত হয়, তাই শিশুকে ধরলেই শিশু ব্যথায় কেঁদে ওঠে। ৩-৪ দিনের মধ্যেই এই জ্বর ভালো হয়ে যায়। অনেক সময় ত্বকে অ্যালার্জি র্যাশের মতো র্যাশ দেখা দিতে পারে। এই র্যাশগুলো কখনো কখনো চুলকানির উদ্রেক করে থাকে। অনেক সময় জ্বরের তীব্রতার সঙ্গে সঙ্গে মাড়ি থেকে রক্তপাত, নাক দিয়ে রক্তপাত, ত্বকের নিচে লালাভ চাকার মতো জমাট বাঁধা রক্তের নমুনা, রক্তবমি, পায়খানার সঙ্গে কালো রক্ত যাওয়া দেখা দেয়। এমনকি রক্তক্ষরণ মস্তিষ্ক এবং হার্টের মধ্যেও হতে পারে। হাইপোভলিউমিক শকে গিয়ে মৃত্যু হতে পারে।
চিকিৎসা পদ্ধতি : ডেঙ্গু জ্বর সাধারণত এমনিতেই সাত দিনের মধ্যে সেরে যায়। এক্ষেত্রে উপসর্গ অনুযায়ী চিকিৎসা করা হয়। এ ছাড়া ডেঙ্গু জ্বরে প্রচুর পানি পান করতে হবে। প্রয়োজনে শিরাপথে স্যালাইন দিতে হবে। হেমোরেজিক ডেঙ্গু জ্বর হয়েছে সন্দেহ হলে রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে। এ ক্ষেত্রে রোগীর রক্তের প্লাটিলেট কাউন্ট এবং পিসিভি পরীক্ষা করাতে হবে। হেমোরেজিক ডেঙ্গু জ্বর রোগী প্লাটিলেট কাউন্ট কমে যেতে পারে। প্লাটিলেট কাউন্ট কমে গেলে রোগীকে শিরাপথে প্লাটিলেট ট্রান্সফিউশন করতে হবে। আর যদি রোগীর প্রত্যক্ষ রক্তক্ষরণ থাকে যেমন- রক্তবমি, পায়খানার সঙ্গে কালো রঙের রক্ত যাওয়া, নাক দিয়ে প্রচুর পরিমাণে রক্তক্ষরণ হওয়া। তাহলে সে ক্ষেত্রে রোগীকে রক্ত দেওয়া যেতে পারে। তাই এসব বিষয়ে সচেতন হতে হবে।