বিশ্বের সর্বত্রই ফার্মেসি অত্যন্ত প্রয়োজনীয় ও গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। মানসম্মত ওষুধ উৎপাদন ও গবেষণা করাই ফার্মাসিস্টের কাজ। তাছাড়া ফার্মেসিতে পড়াশোনা শেষ করে দেশের ভেতরে-বাইরে এ বিষয়ে শিক্ষকতা ও গবেষণার সুযোগ রয়েছে
একটা সময় মাধ্যমিকে অনেকেই বিজ্ঞান বিভাগ বেছে নিতেন শুধু ডাক্তার হওয়ার আশায়। কখনোবা যদি সে সুযোগ হাতছাড়া হয়ে যেত, তাহলে মনঃক্ষুণ্নই হতে হতো বৈকি! কিন্তু বর্তমানে ডাক্তারি পড়ার পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা ফার্মেসিতে পড়ারও আগ্রহ প্রকাশ করে। মূলত স্বাস্থ্যবিজ্ঞানের একটি গুরুত্বপূর্ণ শাখা হলো ফার্মেসি বা ওষুধবিজ্ঞান। ফার্মেসিতে পড়াকালে ওষুধ তৈরি, সেসবের মান নির্ধারণ, ব্যবহার, বিতরণ ও পরিবেশন সম্পর্কে শিক্ষাদান করা হয়। বহির্বিশ্বের দেশগুলোয় ফার্মেসি অত্যন্ত জনপ্রিয় ও গুরুত্ববহ একটি বিষয়। সেখানে একজন ফার্মাসিস্টের মর্যাদা অনেক বেশি। তাছাড়া বর্তমানে আমাদের দেশেও ওষুধ শিল্পের বেশ প্রসার লাভ হয়েছে। গড়ে উঠছে অনেক নতুন ওষুধ তৈরির প্রতিষ্ঠানও। তাই চলতি সময়ে আমাদের দেশে ফার্মেসিতে পড়া ক্যারিয়ারের জন্য লাভজনক বলতেই হবে। তাই ডাক্তারি পড়ার পাশাপাশি ফার্মেসিতে পড়ার দিকেও শিক্ষার্থীরা ঝুঁকে পড়ছে।
ফার্মেসিতে ক্যারিয়ার গঠন
শুরুতেই বলা হয়েছে, বিশ্বের সর্বত্রই ফার্মেসি অত্যন্ত প্রয়োজনীয় ও গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। আমাদের দেশের কথাই যদি বলা হয়, তাহলে অনেক ওষুধই দেশের ভেতরে উৎপাদিত হচ্ছে। তাছাড়া দেশের বাইরেও এসব ওষুধ রফতানি হচ্ছে। এসব মানসম্মত ওষুধ উৎপাদন ও গবেষণা করাই ফার্মাসিস্টের কাজ। এ বিষয়ে গবেষণা প্রভৃতির জন্য দক্ষ ফার্মাসিস্ট তৈরিতে এ বিভাগের গুরুত্ব অপরিসীম। তাছাড়া ফার্মেসিতে পড়াশোনা শেষ করে দেশের ভেতরে-বাইরে এ বিষয়ে শিক্ষকতা ও গবেষণার সুযোগ রয়েছে। এসব ক্ষেত্রে ভালো মানসম্পন্ন বেতনে চাকরি করার সুযোগ থাকে। এসবের বাইরেও স্মার্ট ক্যারিয়ার গঠনে বিষয়টির গুরুত্ব অপরিসীম। সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র ও হাসপাতালে ভালো বেতনে ফার্মাসিস্ট, ক্লিনিক্যাল ফার্মাসিস্ট, ফার্মেসি ম্যানেজার পদে কাজ করার সুযোগ রয়েছে।
স্নাতক অর্জনের পরই একজন ফার্মেসিতে পড়ুয়া শিক্ষার্থী কাজ করার সুযোগ পেতে পারেন। ওষুধ প্রস্তুতকারক ও বিপণনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোয় উৎপাদন, পণ্য ব্যবস্থাপনা, পণ্যের মানোন্নয়নসহ বিভিন্ন বিভাগে স্নাতক অর্জনকারী ফার্মাসিস্টদের নিয়োগ দেয়া হয়।
ফার্মেসিতে পড়তে চাইলে
ফার্মেসিতে উচ্চশিক্ষা অর্জনের ইচ্ছে থাকলে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ভালো ফল করতে হবে। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় নির্দিষ্ট যোগ্যতাসম্পন্ন ফল অর্জন করতে হবে। এরপর বাছাই-পর্বের মাধ্যমে ফার্মেসি বিভাগে ভর্তি হওয়া যাবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে চার বছর মেয়াদি বি ফার্ম শেষে যেকোনো ওষুধ প্রস্তুতকারী বা বিপণনকারী কোম্পানিতে এক মাসের ইন্টার্নশিপ প্রোগ্রাম করতে পারলে কাঙ্ক্ষিত পেশা বেছে নেয়া সম্ভব হবে। দেশের অভ্যন্তরে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালগুলোর মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ইত্যাদিতে এ বিষয়ে পড়া যাবে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়া বেশির ভাগ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ফার্মেসিতে ডিগ্রি নেয়ার সুযোগ রয়েছে। তাছাড়া দেশের বাইরে থেকেও ডিগ্রি নেয়া যেতে পারে।