সন্তান প্রসবকালে খুব জটিল পরিস্থিতি না হলে প্রসূতির সিজার না করানোর পরামর্শ দিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। একইসঙ্গে তিনি জটিলতা এড়াতে সন্তান প্রসবের সময় অন্তঃসত্ত্বা নারীকে অবশ্যই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। নিরাপদ মাতৃত্ব দিবস উপলক্ষে আজ মঙ্গলবার সচিবালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন এই পরামর্শ দেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
দিবসটি উপলক্ষে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক ছাড়াও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. আসাদুল ইসলাম, স্বাস্থ্য ও সেবা বিভাগের সচিব জি এম সালেহ উদ্দিন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদ উপস্থিত ছিলেন।
জাহিদ মালেক বলেন, মাতৃমৃত্যু কমানোর জন্য আমাদের পরামর্শ হলো— প্রসবের জন্য প্রসূতিকে হাসপাতালে নিয়ে আসা। প্রসবকালে মায়ের খুব জটিল পরিস্থিতি না হলে সিজারিয়ান না করার পরামর্শ দিচ্ছি আমরা। দারিদ্র্যের হার কমলে এবং পুষ্টির হারের উন্নয়ন ঘটলে মাতৃমুত্যু কমবে। এজন্য জনবল নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে।
মন্ত্রী বলেন, মাতৃমৃত্যুর হার কমাতে, প্রাতিষ্ঠানিক প্রসবের হার বৃদ্ধি, গর্ভকালীন জটিলতার ব্যবস্থাপনা ও প্রয়োজনীয় জরুরী প্রসূতি সেবা নিশ্চিতে ‘ডিমান্ড সাইড ফাইনান্সিং মাতৃস্বাস্থ্য ভাউচার স্কীম’ চালু করা হয়েছে।
১৯৯৭ সাল থেকে দেশে নিরাপদ মাতৃত্ব দিবস পালন করা হচ্ছে উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, মাতৃমৃত্যুর হার কমানোর ক্ষেত্রে এমডিজি (সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা) অর্জন সম্ভব না হলেও সরকার এ ব্যাপারে কাজ করছে। ২০১৫ সালে মাতৃ মৃত্যু প্রতি লাখে ১৪৩ জন থাকার কথা ছিল। কিন্তু ২০১৭ সালে আমাদের দেশে এটা ছিল ১৭৬ জন। প্রতি লাখে ২০১৮-১৯ সালে এটা ১৭২ জনে নামিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। ২০৩০ সালে এসডিজি (টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা) বাস্তবায়নে মাতৃমৃত্যু ৭০ জনে নামিয়ে আনার লক্ষ্যে সরকার কাজ করছে।
স্বাস্থ্যখাতে সরকারের উন্নয়নের বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার প্রাতিষ্ঠানিক সেবা বাড়াতে জনবল নিয়োগ, নতুন হাসপাতাল নির্মাণ, শয্যা সংখ্যা বৃদ্ধি, প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও ঔষধপত্র সরবরাহের উদ্যোগ নিয়েছে।
জাহিদ মালেক জানান, জাতিসংঘের সাধারণ সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণা অনুযায়ী ৩ হাজার জন মিডওয়াইফ তৈরির লক্ষ্যে মিডওয়াফারি চালু করা হয়েছে। এ পর্যন্ত ১৬শ নার্স ৬ মাসব্যাপী প্রশিক্ষণ শেষ করে সার্টিফাইড মিডওয়াইফ এর সনদ পেয়েছেন। এরা সবাই উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে কাজ করছেন।