কম ওজন নিয়ে বিশ্বে সবচেয়ে বেশি নবজাতকের জন্ম হয় দক্ষিণ এশিয়া ও আফ্রিকায়। এসব অঞ্চলের ১০টি দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি এমন শিশুর জন্ম হয় বাংলাদেশে। তালিকায় এরপরই রয়েছে কমোরোস ও নেপাল।
বৃহস্পতিবার ‘দ্য লানসেট গ্লোবাল হেলথ’ প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে।
জন্মের সময় নবজাতকের গ্রহণযোগ্য ওজন হলো ২.৫ কিলোগ্রাম; কিন্তু ২০১৫ সালে বাংলাদেশে শতকরা ২৭ ভাগ অর্থাৎ ৮ লাখ ৬৪ হাজার শিশু জন্মগ্রহণ করেছে এ ওজনের নিচে। ২০০০ সালে এমন কম ওজন নিয়ে জন্মগ্রহণ করেছিল শতকরা ৩৬ ভাগ শিশু। অন্যদিকে কমোরোস ও নেপালে এ হার যথাক্রমে ২৩.৭ এবং ২১.৮ শতাংশ। তালিকায় ফিলিপাইন, পঞ্চম, লাওস সপ্তম ও মৌরিতিয়াস দশম অবস্থানে রয়েছে।
বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশ চীনেও কম ওজন নিয়ে জন্মগ্রহণ করছে লাখো শিশু। দেশটিতে ২০১৫ সালে জন্ম নিয়েছে ১ কোটি ৭ লাখ ২১ হাজার ৬০০ শিশু। এদের মধ্যে কম ওজন নিয়ে জন্মগ্রহণ করেছে ৮ লাখ ৪৬ হাজার ৯০০ শিশু। অন্যদিকে মানসম্পন্ন তথ্যের ঘাটতি থাকায় ভারতে এ সংখ্যা হিসাব করতে পারেননি গবেষকরা।
গ্রহণযোগ্য সীমার চেয়ে কম ওজন নিয়ে জন্মগ্রহণকারী শিশুর মৃত্যুহার অনেক বেশি। তাদের শরীর বৃদ্ধিতে নানা রকম ঝুঁকির পাশাপাশি থাকে বিভিন্ন ক্রনিক বা জটিল রোগে অসুস্থ হওয়ার আশঙ্কা থাকে। বিশ্বজুড়ে বছরে মোট ২৫ লাখ শিশু জন্মগ্রহণ করে। এদের মধ্যে শতকরা ৮০ ভাগেরও বেশি মারা যায় কম ওজন নিয়ে জন্মগ্রহণ করার কারণে।
এদিকে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১২ সালে প্রায় ১৯৫টি দেশ কম ওজন নিয়ে জন্মগ্রহণকারী শিশুর জন্ম ২০২৫ সাল নাগাদ শতকরা ৩০ ভাগ কমিয়ে আনতে চেয়েছে। কিন্তু গবেষণায় দেখা যায়, এ হার কমছে খুব ধীরগতিতে। ২০০০ সালে এ হার ছিল শতকরা ১৭.৫। তা কমে ২০১৫ সালে দাঁড়িয়েছে শতকরা ১৪.৬ ভাগে।
লন্ডন স্কুল অব হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিক্যাল মেডিসিনের ডা. হান্নাহ ব্লেনকাউ বলেন, ‘কম ওজন নিয়ে জন্মগ্রহণকারী শিশুর হার খুব ধীরগতিতে কমার অর্থ হলো এ বিষয়ে আরও পদক্ষেপ নিতে হবে। এক্ষেত্রে আমাদের অনুমান বলছে, জাতীয় পর্যায়ে সরকারগুলো কম ওজন নিয়ে জন্ম নেওয়া শিশুর সংখ্যা কমাতে খুবই কম কাজ করছে।’