প্রতিটি ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট (আইসিইউ) বেড স্থাপনের জন্য খরচ গড়ে প্রায় ৫৩ লাখ টাকা এবং প্রতিটি করোনারি কেয়ার ইউনিট (সিসিইউ) বেড স্থাপনের জন্য খরচ গড়ে প্রায় ২৩ লাখ টাকা প্রয়োজন হতে পারে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোর পরিচালক ডা. মো. আমিনুল হাসানের দেওয়া এক প্রতিবেদন আদালতে তুলে ধরেন রাষ্ট্রপক্ষ। একইসঙ্গে সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিকগুলোতে আইসিইউ এবং সিসিইউ’র একটি তালিকাও দাখিল করা হয়েছে। তবে এ তথ্য সংগ্রহের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে বলে জানানো হয়।
এছাড়া ‘দ্য মেডিকেল প্র্যাকটিস অ্যান্ড প্রাইভেট ক্লিনিকস অ্যান্ড ল্যাবরেটরিস (রেগুলেশন) অর্ডিন্যান্স-১৯৮২’ অনুযায়ী নীতিমালা প্রণয়নের বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের এক প্রতিবেদন থেকে রাষ্ট্রপক্ষ আদালতে বলেন, যেহেতু দীর্ঘদিনের পুরনো অর্ডিন্যান্স রহিত করে যুগোপযোগী করত: স্বাস্থ্যসেবা ও সুরক্ষা আইন ২০১৯ প্রণয়নের কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে এবং যেহেতু লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিভাগের বিদ্যমান নির্দেশনার আলোকে আইন প্রণীত হওয়ার পর উক্ত আইনের আলোকে বিধিমালা বা গাইডলাইন প্রণয়ন করা যুক্তিযুক্ত, সেহেতু দেশের বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার, প্রাইভেট ল্যাবরেটরিজের কার্যক্রম মনিটরিং এবং নিয়ন্ত্রণ করার লক্ষ্যে প্রস্তাবিত স্বাস্থ্যসেবা ও সুরক্ষা আইন ২০১৯ জাতীয় সংসদে পাস হওয়ার পর ওই আইনের আলোকে বিধিমালা বা গাইডলাইন প্রণয়ন করা যেতে পারে।
এ সময় আদালত জানতে চান আইনটি কি অবস্থায় আছে। জবাবে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে বলা হয়, খসড়া পর্যায়ে কেবিনেটে আছে।
এরপর মঙ্গলবার (২১ মে) বিচারপতি জেবিএম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ ২৬ জুনের (বুধবার) মধ্যে আইসিইউ ও সিসিইউ এর হালনাগাদ তালিকা চেয়ে আদেশ দেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন সাজু। রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ড. বশির আহমেদ।
হিউম্যান রাইটস ল’ইয়ার্স অ্যান্ড সিকিউরিং এনভায়রনমেন্ট সোসাইটি অব বাংলাদেশের পক্ষে কোষাধ্যক্ষ মো. শাহ আলম গত বছরের জুলাই মাসে এ রিট দায়ের করেন।
রিটের পর ২৪ জুলাই হাইকোর্ট বেসরকারি ক্লিনিক/হাসপাতাল ল্যাবরেটরি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মূল্য তালিকা এবং ফি পাবলিক প্লেসে ১৫ দিনের মধ্যে আইন অনুসারে প্রদর্শনের নির্দেশ দেন।
ওইদিন আদেশে বলা হয়, দ্য মেডিকেল প্র্যাকটিস অ্যান্ড প্রাইভেট ক্লিনিকস অ্যান্ড ল্যাবরেটরিস (রেগুলেশন) অর্ডিন্যান্স, ১৯৮২ অনুসারে নীতিমালা তৈরি এবং বাস্তবায়নের জন্য ৬০ দিনের মধ্যে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করতে হবে।
এছাড়া রুলে চলমান হাসপাতাল এবং ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের লাইসেন্স অনুমোদন, তাদের সেবার বিষয় তদারকি এবং নিয়ন্ত্রণের জন্য দ্য মেডিকেল প্র্যাকটিস অ্যান্ড প্রাইভেট ক্লিনিকস অ্যান্ড ল্যাবরেটরিস (রেগুলেশন) অর্ডিন্যান্স, ১৯৮২ অনুসারে নীতিমালা তৈরির কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, সব জেলা সদরের হাসপাতালে আইসিউ/সিসিইউ স্থাপনের কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট।
এ আদেশের পর হাইকোর্টে মন্ত্রণালয়ের দেওয়া প্রতিবেদনে বলা হয়, আদালতের আদেশ অনুযায়ী ৯ আগস্টের মধ্যে মূল্য তালিকা টানানো নিশ্চিত করা এবং আদেশ বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার উদ্যোগ নেওয়ার জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে অনুরোধ করা হয়েছে।
এ আদেশ অনুসারে গত ২৪ জানুয়ারি ‘দ্য মেডিকেল প্র্যাকটিস অ্যান্ড প্রাইভেট ক্লিনিকস অ্যান্ড ল্যাবরেটরিস (রেগুলেশন) অর্ডিন্যান্স-১৯৮২’ অনুযায়ী স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবকে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
পরে আদালত দেশের সব সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিকগুলোতে কতগুলো আইসিইউ এবং সিসিইউ আছে, তার একটি তালিকা চেয়েছিলেন। একই সঙ্গে আদালত একটি আইসিইউ ও সিসিইউ ইউনিট স্থাপনে কত টাকা খরচ হয়, কি পরিমাণ লোকবল ও বিশেষজ্ঞের প্রয়োজন, সে বিষয়েও প্রতিবেদন দিতে বলেছেন।
আদেশ অনুসারে আদালতে মন্ত্রণালয় প্রতিবেদন দেন। একটি আইসিইউ ও সিসিইউ ইউনিট স্থাপনে কত টাকা খরচ হয়, কি পরিমাণ লোকবল ও বিশেষজ্ঞের প্রয়োজন, সে বিষয়ে প্রতিবেদনে দেয় মন্ত্রণালয়।