অ্যালার্জি ও হৃদরোগের ওষুধে স্মৃতিশক্তি হ্রাস ও স্ট্রোকের ঝুঁকি

সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা এক গবেষণায় জানতে পেরেছেন যে, বিশেষ বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন (এন্টিকোলিনার্জিক ধর্ম রয়েছে এমন ওষুধ) কিছু ওষুধ মানুষের মস্তিস্কের ক্ষতিসাধন করে থাকে। এর ফলে স্মৃতিশক্তি হ্রাস পেতে পারে । এ ছাড়া এই ওষুধ ব্যবহারে স্ট্রোকের ঝুঁকিও বেড়ে যেতে পারে অনেকটা। 

গবেষকরা বলছেন, ওষুধগুলোর ওই বৈশিষ্ট্যগুলোকে এন্টিকোলিনার্জিক ধর্ম বলা হয়। ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন করা অনেক সাধারণ ওষুধে ওই বৈশিষ্ট্যগুলো রয়েছে। যেমন এলার্জি, পার্কিনসন রোগ এবং হৃদরোগের জন্য ব্যবহৃত ওষুধ।

এর আগের গবেষণায় দেখা গেছে, এই অ্যান্টিকোলিনার্জি বৈশিষ্ট্যের ওষুধগুলো স্নায়ুতন্ত্রের অংশগুলোর মধ্যে যোগাযোগকে বিঘ্ন ঘটাতে  পারে।

ওই ওষুধের নেতিবাচক ফলাফলগুলোর মধ্যে রয়েছে-ব্লারড ভিশন, কনফিউশন এবং স্মৃতিভ্রষ্টতা। এর ফলে মূর্ছা যাওয়া ও হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বৃদ্ধি পেতে পারে। 
আবারডিন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা ওই গবেষণাটি করেছেন। 

তারা বলছেন, ওই ওষুধগুলোর কারণে স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও অনেকটা বেড়ে যেতে পারে। 

এই ওষুধ গ্রহণ করেছে এমন ২২ হাজার লোকের ওপর পরীক্ষা চালিয়েছেন গবেষকরা। পরীক্ষায় অংশ নেওয়া লোকদের বয়স ছিল ৩৯ থেকে ৭৯ বছর। তাদের ওপর ২০ বছরের বেশি সময় নিরীক্ষা চালানো হয়েছে।

গবেষক দলটি গবেষণায় জানতে পেরেছেন, উচ্চমাত্রার এন্টিকোলিনার্জিক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে- এমন ওষুধ যে রোগীরা সেবন করছে তাদের স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে অনেক বেশি।

যারা এ ধরনের ওষুধ সেবন করেনি তাদের তুলনায় ওই রোগীদের স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি ৫৯ শতাংশ এবং মৃত্যুঝুঁকি ৮৬ শতাংশ বেশি। 

গবেষকরা জানান, এন্টিকোলিনার্জিক বৈশিষ্ট্যের ওষুধ সেবনে প্রদাহ বেড়ে যেতে পারে। এর ফলে স্ট্রোকের পরপর এই প্রদাহের কারণে জীবনঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে। এই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণে লোকদের স্বাস্থ্যঝুঁকির শঙ্কা রয়েই যায়। 

এ বিষয়ে গবেষকরা পরামর্শ দিয়েছেন, ডাক্তার ও চিকিতসা-সংশ্লিষ্ট লোকদের তাদের রোগীদের স্ট্রোকের হাত থেকে রক্ষা করতে ওই গুরুতর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার বিষয়ে সচেতন হতে হবে। 

ওই গবেষক দলের প্রধান ছিলেন ইউনিভার্সিটি অব আবারডিনের অনারারি রিসার্চ ফেলো ডক্টর ডেভিড গ্যাম্পবেল। 

গবেষণাপত্রটি দ্য ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অব এপিডেমিওলজিতে প্রকাশিত হয়েছে। 

সূত্র : নলেজ সায়েন্স রিপোর্ট 

About Post Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *