নিয়ম মেনে জীবনযাপন করার পরও দীর্ঘদিন কোমর ব্যথায় ভুগছেন অনেকেই। বেশির ভাগ মানুষ জীবনের কোনো না কোনো সময় কোমর ব্যথায় ভোগেন। একবার, দুবার, কারো কারো বেলায় এ ব্যথা বহুবার হয়ে থাকে। বিষয়টা নিয়ে অনেকেই ভাবনায় পড়ে যান। চিকিৎসাবিজ্ঞান বলে, শুরু থেকে সঠিক চিকিৎসা নিলে এ ব্যথা সাধারণত দু-একদিন বা সপ্তাহ খানেকের মধ্যে ঠিক হয়ে যায়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এ পরামর্শ না মানার ফলে প্রাথমিক কোমর ব্যথা ধীরে ধীরে ক্রনিক বা দীর্ঘদিনের কোমর ব্যথায় পরিণত হয়।
কোমর ব্যথা কারো কারো ক্ষেত্রে তিন মাস বা তার অধিক সময় পর্যন্ত থাকে, এমনকি বছরের পর বছরও। দীর্ঘসময় ধরে থাকা কোমরের ওই ব্যথাকে ক্রনিক ব্যথা বলা হয়।
কেন হয়?
কেন কোমর ব্যথা হয়, সেটা বুঝতে হলে কোমরের গঠনটা বোঝা জরুরি। আমাদের মেরুদণ্ড মোট ২৪টি ভার্টিব্রাল দিয়ে তৈরি। প্রত্যেকরি ভার্টিব্রাল একে অন্যের সঙ্গে ইন্টার ভার্টিব্রাল ডিস্ক দিয়ে সংযুক্ত থাকে। লিগামেন্ট ও মাংসপেশি দিয়ে পুরো মেরুদণ্ড এমনভাবে গঠিত হয়, যাতে মেরুদণ্ড সহজেই নাড়াচাড়া করতে পারে।
যেমন আমরা যখন ঝুঁকে কোনো কাজ করি বা পেছনের দিকে কোমর বাঁকিয়ে নিই, তখন কোমরের লিগামেন্ট ও মাংসপেশি কাজ করে।
এখন যদি কোনো কারণে মাংশপেশি দুর্বল হয় বা স্পাজম হয়ে শক্ত হয়ে যায় অথবা মাংশপেশি কিংবা লিগামেন্ট অসামঞ্জস্য হয়, তখনই মূলত কোমর ব্যথা বা কোমরে এক ধরনের অস্বস্তি হয়ে থাকে।
চিকিৎসার ধরন
সাধারণত কোমর ব্যথার চিকিৎসাকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়।
ব্যায়াম
রিলাক্সেশন
ওষুধ
ব্যায়াম সবচেয়ে বেশি কার্যকরী, কখনো কখনো এটাই একমাত্র জরুরি চিকিৎসা পদ্ধতি। তবে কোন ধরনের ব্যায়াম করা উচিত, তা একজন ফিজিওথেরাপি চিকিৎসকের পরামর্শে করা প্রয়োজন।
সাধারণ কিছু ব্যায়াম করা যেতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে স্ট্রেস বা দুশ্চিন্তা যেকোনো ব্যথাকে বাড়িয়ে দেয়।
ব্যায়াম
১. প্রথমে উপুড় হয়ে শুয়ে পড়ুন। তারপর ধীরে ধীরে সামনের দিকে হাতে চাপ দিয়ে ঘাড়সহ শরীরের ওপরের অংশ তুলতে চেষ্টা করুন। ৫ থেকে ১০ সেকেন্ড অপেক্ষা করে, আবার শুয়ে পড়ুন। এভাবে ১০ বার রিপিট করুন।
২. সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে কোমরে হাত দিয়ে পেছনের দিকে যাওয়া এবং কয়েক সেকেন্ড অপেক্ষা করে পুনরায় সোজা অবস্থায় আসা। এভাবে ১০ বার রিপিট করুন।
রিলাক্সেশন
কোনো একটি রিলাক্স পজিশনে থেকে মেডিটেশন করতে পারেন।
সবসময়ই পজিটিভ চিন্তা করুন। কারণ গবেষণা বলছে পজিটিভ চিন্তা ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।
কোমরকে বাঁকিয়ে বা বেশি চাপ হয়, এমন কাজ করা থেকে বিরত থাকুন।
ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। অতিরিক্ত ওজন মেরুদণ্ডের হাড়ের ওপরে চাপ সৃষ্টি করে ব্যথা বাড়িয়ে দেয়।