আইবিএস বা ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম পরিপাকতন্ত্রের একটি রোগ। ১০ থেকে ২০ শতাংশ মানুষ আইবিএসে আক্রান্ত। এর প্রধান লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে পেটব্যথা, পেট ফাঁপা, পায়খানার অভ্যাসে পরিবর্তন ইত্যাদি। পায়খানার অভ্যাস পরিবর্তন বলতে কোষ্ঠকাঠিন্য বা ডায়রিয়া যেকোনোটি অথবা উভয়ের সংমিশ্রণকে বোঝায়।
কীভাবে বুঝবেন
বেশির ভাগ ক্ষেত্রে রোগীরা বলেন যে তাঁদের পায়খানা পরিপূর্ণ বা তৃপ্তিকর হয় না, মলের সঙ্গে অতিরিক্ত মিউকাস যায়, খাওয়ার পরপরই শৌচাগারে দৌড়াতে হয়। এ ছাড়া অতিরিক্ত ঢেকুর ওঠা, তলপেট থেকে শুরু করে পেটের যেকোনো জায়গায় ব্যথা, যা মলত্যাগ করার পর আংশিক বা পুরোটা প্রশমিত হয়, বমি বমি ভাব, বুক জ্বালাপোড়া ইত্যাদিও হতে পারে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই আইবিএসের কোনো সুস্পষ্ট কারণ পাওয়া যায় না। তবে অনেকের ক্ষেত্রে কিছু কিছু নির্দিষ্ট খাবার ও অতিরিক্ত মানসিক চাপ উপসর্গ বাড়িয়ে দিতে পারে।
কীভাবে শনাক্ত করবেন
বেশির ভাগ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয় অন্য রোগগুলোর বিষয়ে সন্দেহমুক্ত হওয়ার জন্য। এ ধরনের উপসর্গের সঙ্গে কিছু বিপজ্জনক চিহ্ন বা রেড ফ্ল্যাগ সাইন থাকলে পরীক্ষা–নিরীক্ষা করা উচিত। এমন চিহ্নগুলোর মধ্যে রয়েছে:
বয়স ৫০-৫৫–এর বেশি
রক্তশূন্যতা
ওজন কমে যাওয়া
পেটের বিভিন্ন ক্যানসারের পারিবারিক ইতিহাস
চিকিৎসা কী
উপসর্গ অনুযায়ী একেকজনের জন্য একেক রকম চিকিৎসা। জীবনাচরণ বা খাদ্যাভাসের পরিবর্তন অনেকটাই উপকার বয়ে আনবে। এর সঙ্গে অল্প কিছু ক্ষেত্রে কিছু ওষুধের প্রয়োজন হয়।
কোষ্ঠকাঠিন্য প্রধান সমস্যা হলে আঁশজাতীয় খাবারের পাশাপাশি প্রচুর পানি পান করতে হবে। তবে মনে রাখতে হবে অন্যান্য খাবার খাওয়ার সময় এবং একবারে অনেক পানি পান করা যাবে না।
অতিরিক্ত চা-কফি পরিহার করুন।
ডাল ও ডালজাতীয় খাবার এবং অতিরিক্ত ফল, ফলের জুস এড়িয়ে যাওয়াই ভালো।
দুধ-দুধজাতীয় খাবার পরিহার করুন।
কিছু ক্ষেত্রে প্রোবায়োটিক খানিকটা কাজ করে।
সবার জন্য সব চিকিৎসা প্রযোজ্য নয়। উপসর্গ অনুযায়ী চিকিৎসকই ঠিক করবেন কাকে কোনভাবে চিকিৎসা করা হবে। তবে সঠিক কাউন্সেলিংয়ের অভাবে আইবিএসের রোগীরা উদ্ভ্রান্তের মতো ডাক্তার থেকে ডাক্তার, দেশ থেকে বিদেশ ঘুরে বেড়ান ও নানা ধরনের চিকিৎসা নেন, নানা পরীক্ষা–নিরীক্ষা করতে থাকেন। তাই আইবিএস শনাক্ত করা হয়ে থাকলে অস্থির না হয়ে এর সঙ্গে মানিয়ে চলাই ভালো। নিজের রোগ সম্পর্কে জানুন, ভালো থাকুন।