গত কয়েকদিনের অসহ্য গরম এবং দূষিত পানির কারণে হঠাৎ রাজধানীতে ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা দিয়েছে। ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মহাখালীতে অবস্থিত আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র বাংলাদেশে (আইসিডিডিআর’বি) ঘণ্টায় ৩৬ জন রোগী ভর্তি হচ্ছেন। প্রতি দুই মিনিটে ভর্তি হচ্ছেন একজন করে রোগী।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ন্যাশনাল হেলথ ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট সেন্টার অ্যান্ড কন্ট্রোল রুম সূত্র জানিয়েছে, ২৪ ঘণ্টায় দেশে ১ হাজার ৫০৬ জন রোগী ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে মহাখালীতে অবস্থিত আইসিডিডিআর’বিতে ভর্তি হয়েছেন ৮৬০ জন।
গত সাত দিনে গড়ে প্রতিদিন হাসপাতালটিতে আট শতাধিক মানুষ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছেন বলে সূত্র জানিয়েছে। প্রতিদিনই শত শত রোগী আসছেন। অন্যান্য হাসপাতালেও ভিড় বাড়ছে। এতে হিমশিম খাচ্ছে আইসিডিডিআর’বি কর্তৃপক্ষ।
হাসপাতালটির তথ্য অনুযায়ী, ২৩ এপ্রিল ভর্তি হয়েছে ৮৬০ জন। এর মধ্যে বয়স্ক এবং শিশু রয়েছে। ২২ এপ্রিল ভর্তি হয়েছে ৮৮৯ জন, ২১ এপ্রিল ৭৬৮ জন ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী আইসিডিডিআর’বিতে ভর্তি হয়।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, বেশি রোগী আসছে মিরপুর, টঙ্গী ও যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে।
ন্যাশনাল হেলথ ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট সেন্টার অ্যান্ড কন্ট্রোল রুমের তথ্য অনুযায়ী, দেশে গত এক মাসে ৩৭ হাজার ৯২৫ জন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে আইসিডিডিআর’বিতে ভর্তি হয়েছে ১৫ হাজার ৬৪৯ জন।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ওয়াসার সুয়ারেজের কাজের কারণে পাইপ দিয়ে অপরিষ্কার পানি ঢোকে। ফলে দূষিত পানি খেয়ে ডায়রিয়া আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। তাছাড়া বেড়েছে গরমের তীব্রতা। আর এ গরমের সঙ্গে বাড়ছে রাজধানীতে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। আইসিডিডিআর’বির তথ্য অনুযায়ী, মার্চ মাসের শেষ সপ্তাহ থেকেই ডায়রিয়া আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। ডায়রিয়া পানিবাহিত রোগ।
কন্ট্রোল রুমের ইনচার্জ ডা. আয়েশা আকতার জানান, বিভিন্ন জায়গায় ওয়াসার সুয়ারেজের কাজের কারণে পাইপ দিয়ে দূষিত পানি প্রবেশ করায় ওইসব এলাকায় ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা দিয়েছে। এটি পানিবাহিত রোগ। মার্চ, এপ্রিল ও মে মাস পর্যন্ত ডায়রিয়ার রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকে। তারপর কমে যায়।