ডিমেনশিয়া মস্তিষ্কের এক ধরনের রোগ যার ফলে কিছু মনে রাখতে না পারেন না রোগী। এমনকি এ রোগটির কারণে একটু আগেই করা কাজ ভুলে যায় অনেকে।
রোগটি নিয়ে আজ ঢাকায় একটি সেমিনারের আয়োজন করেছে বাংলাদেশ আলঝেইমার সোসাইটি। ডিমেনশিয়ার একটি বড় কারণ হলো আলঝেইমার্স ।
সোসাইটির একজন সদস্য এবং সাবেক এমপি সেলিনা জাহান লিটা বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, তারা অনেকদিন ধরেই বাংলাদেশে রোগটি সম্পর্কে সচেতনতা তৈরির চেষ্টা করছেন। কিন্তু রোগটি সরকারি বা বেসরকারি কোন দিক থেকেই যথাযথ গুরুত্ব এখনো পায়নি। এক হিসেবে দেখা যায়, বাংলাদেশে ২০১৫ সালে ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছিলো পাঁচ লাখ যা আগামী ২০৩০ সালে বেড়ে নয় লাখ হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। আলঝেইমার সোসাইটির হিসেবে, ২০৫০ সাল নাগাদ এ রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ২২ লাখ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
“অর্থাৎ দিন দিন রোগের প্রকোপ বেড়েই চলেছে। সে হিসেবে প্রতিকারের ব্যবস্থা খুব কমই,” বলছিলেন সেলিনা জাহান।
“মানুষকে সচেতন করা দরকার। তাহলে আক্রান্ত হলেও মানুষ বৃদ্ধ বয়সে করুণ পরিণতির মুখোমুখি হবেনা।”
কোন বয়সের মানুষ বেশি আক্রান্ত হয়?
সেলিনা জাহান লিটা বলছেন, বাংলাদেশে ষাট বছরের বেশি বয়সের বয়সের মানুষ এ রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। আবার কিছু ক্ষেত্রে ৪০-৫০ বছরে বয়সের মধ্যেও অনেককে আক্রান্ত হতে দেখা যাচ্ছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের নিম্নবিত্তের পাশাপাশি উচ্চবিত্তের মানুষেরাও রোগটিতে আক্রান্ত হচ্ছেন।
“বাংলাদেশে বিশেষ করে যারা দারিদ্রসীমার নীচে আছেন তাদের এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি।”
“উচ্চবিত্ত অনেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন কিন্তু মূলত রোগটির ক্ষেত্রে বেশি দরকার সচেতনতা।”
চিকিৎসা আছে পর্যাপ্ত?
সেলিনা জাহান বলছেন, ডিমেনশিয়া নিয়ে সরকারিভাবে কোনো উদ্যোগ চোখে পড়েনা।
“রোগটির তেমন চিকিৎসা নেই। কিন্তু শুধু চিকিৎসার বিষয় নয়, রোগটি নিয়ে সচেতনতা তৈরি হওয়া গুরুত্বপূর্ণ।”
“এটি হলে রোগটিকে আমরা নিয়ন্ত্রণে আনতে পারবো। বৃদ্ধ বয়সের করুণ পরিণতি থেকে রক্ষা করতে পারবো।”
তিনি বলেন, হাসপাতালগুলোতে ডিমেনশিয়া কর্নার তৈরি করার দরকার। পাশাপাশি ডাক্তার ও নার্সদের তাদের করণীয় সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা থাকা উচিত।
“মনে রাখতে হবে পারিবারিকভাবে সচেতনতা তৈরি হলে রোগীরা জীবনের শেষ পর্যায়ে এসে করুণ পরিণতি থেকে কিছুটা হলেও রেহাই পাবেন।”