মেহেরপুর এ্যাপোলো নার্সিং হোমে ডাক্তারের ভুল সিজারে সোমবার রাতে সেলিনা নামের এক প্রসূতি রোগীর মৃত্যু হয়েছে।সোমবার এ্যাপোলো নার্সিং হোমের চুক্তিভিত্তিক চিকিৎসক ডা. পারভিন আক্তার পরপর দুবার সেলিনাকে অপারেশন থিয়েটরে নেওয়ায় রোগীর মৃত্যু হয়েছে বলে রোগীর পরিবারের দাবি।
সেলিনা গাংনী উপজেলার চৌগাছা গ্রামের মো. আরজান আলীর স্ত্রী। নিহতের মামি শাশুড়ি বলেন, সকালে প্রসব ব্যাথা শুরু হলে সেলিনাকে মেহেরপুরের এ্যাপোলো নার্সিং হোমে নিয়ে আসা হয়। আসার পর তাকে সিজার করতে হবে বলে জানান ডাক্তাররা। ডাক্তারের কথা মতো আমরা সিজার করার জন্য রাজি হয়ে যাই। সকাল ১১টার দিকে তাকে সিজার করে বাচ্চা ভূমিষ্ঠ করা হয়। সিজারের পর রোগীকে খুব অল্প সময়ের মধ্যে পরপর দুই ব্যাগ রক্ত দেওয়া হয়। রক্ত দেওয়ার পর রোগী অস্বাভাবিক আচরণ করতে থাকে। ছটফট শুরু করে। সেই সাথে নিজের চুল ছিড়তে থাকে। এমন আচরণ দেখে আমরা ডাক্তারের কাছে গেলে তারা বলে রক্ত দেওয়ার কারণে এরকম আচরণ করছে, কিছুক্ষণ পর ঠিক হয়ে যাবে। রোগীর অবস্থা ক্রমেই অবনতি হলে বিকাল ৫টার দিকে শেলিনাকে আবার অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হয়। সেখানে তাকে পুনরায় অপারেশন করা হয় এবং সেই সাথে আরও এক ব্যাগ রক্ত দেওয়া হয়।
দ্বিতীয় অপারেশন করার পর রোগীর অবস্থা আরও অবনতির দিকে যায়। রাত আনুমানিক ৯টার দিকে শেলিনা আক্তার মৃত্যুবরণ করেন।
নিহতের ভায়ের ছেলে তানিন বলেন, কি কারণে একজন সিজারের রোগীকে দুই বার অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হলো আমরা তার সুষ্ঠু তদন্ত চাই। তিনি এ্যাপোলো নার্সিং হোমের চুক্তিভিত্তিক ডাক্তার পারভিন আক্তারের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিসহ বিচার না হওয়া পর্যন্ত নাসিং হোমটি সিলগালা করে দেওয়ার জন্য প্রশাসনের কাছে দাবি জানান।
এই ব্যাপারে ডা. পারভিন আক্তার বলেন. রোগীর শরীরে রক্ত কম ছিল। তাকে সকালে সিজার করার পর তার শরীরে রক্ত দেওয়া হয়। তারপর তার আচরণ খারাপ দেখলে আমরা পুনরায় তাকে পরীক্ষা করার জন্য অপারেশন থিয়েটারে নিই। সেখান থেকে বের করে রোগীর অবস্থা ভালো দেখে আমি চলে যাই। আমি চলে যাবার পর তার শরীরে আবার রক্ত দেওয়া হয়। কিন্তু সে রাত ৯টার দিকে মারা যায়।
ডা.পারভিন আক্তার আরও বলেন, আমাদের সিজারে কোন ভুল ছিল না। কিন্তু কিভাবে মারা গেল আমি বুঝতে পারছি না। নিহত সেলিনার স্বামী আরজান আলী কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, সকালে যখন সেলিনাকে নার্সিং হোমে নিয়ে আসি তখন সে শারীরিকভাবে সুস্থ ছিল। সিজার করার পর সে অসুস্থ হয়ে যায়। তিনি বলেন, একজন রোগীকে কেন দুইবার অপারেশন করা হয় আমি নাসিং হোম কতৃপক্ষের কাছে তা জানতে চাই।