বগুড়ার মফিজ পাগলা মোড় এলাকার একটি ভবনের গুদাম থেকে বিপুল পরিমাণ সরকারি ওষুধ জব্দ করা হয়েছে। আজ রোববার বেলা ১১টার দিকে শহরের ওই গুদামে অভিযান চালানো হয়। এ ঘটনায় গতকাল শনিবার রাতে মিজানুর রহমান নামের এক ব্যবসায়ীকে আটক করা হয়।
পুলিশ জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মফিজ পাগলার মোড়ের একটি ভবনের তিনটি ফ্লোরে অভিযান চালানো হয়। এ সময় সরকারি বিভিন্ন প্রকার ওষুধ উদ্ধার করা হয়। এর মধ্যে অ্যান্টিবায়োটিক, স্যালাইন, ইনজেকশন, অপারেশনের কাজে ব্যবহৃত ওষুধ ও সরঞ্জাম জব্দ করা হয়। গতকাল রাতে মিজানুর রহমানকে আটক করা হয়। এই ওষুধগুলো জালিয়াতির মাধ্যমে কিনেছেন বলে পুলিশকে জানিয়েছেন রবিন ট্রেডার্স ইন্টারন্যাশনালের মালিক মিজানুর রহমান।
আজ সরেজমিনে দেখা যায়, ভবনের দোতলার সিঁড়িতে ওষুধের কার্টন, প্লাস্টিকের বিভিন্ন কনটেইনার পড়ে আছে। ভবনের তৃতীয় তলায় দেখা গেল কয়েক হাজার ওষুধের বাক্স। মেঝেতে পড়ে আছে শত শত ওষুধের পাতা, অপারেশনের কাজে ব্যবহৃত ওষুধ ও সরঞ্জাম জব্দ। প্রায় পাঁচ শ স্কয়ার ফিটের জায়গায় লাখ লাখ টাকার সরকারি ওষুধ মজুত রাখা হয়েছে। একই অবস্থা ওই ভবনের চারতলা ও পাঁচ তলায়। ওষুধের চাপে পা ফেলায় জায়গা নেই।
কোথায় এই ওষুধ পেলেন জানতে চাইলে মিজানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, সরকারি বিভিন্ন হাসপাতালের স্টোরকিপার ও সাপ্লাইয়ারের কাছ থেকে কিনেছেন। তিনি এই ওষুধগুলো মাত্র ৯০ হাজার টাকায় এনেছেন। তবে জেলা পুলিশের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা বলেন, এসব ওষুধের বাজারমূল্য অন্তত কোটি টাকা হবে।
বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তী বলেন, প্রচুর পরিমাণ সরকারি ওষুধ রয়েছে। এগুলো জব্দ করার কাজ চলছে। ওষুধ কোম্পানির কোনো প্রতিনিধি দিয়ে দেখিয়ে ওষুধের প্রকৃত দাম নির্ধারণ করা হবে। আর মিজানুরের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জানতে চাইলে বগুড়ার ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন এবং সদর স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সামির হোসেন বলেন, এই ওষুধগুলো সরকারি হাসপাতালের স্টোরে ঢোকার আগেই এখানে এসেছে। হয়তো কোনো ঠিকাদার যোগসাজশ করে ওষুধগুলো অবৈধভাবে বিক্রি করেছেন। আর সরকারি প্রতিষ্ঠানের কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী এর সঙ্গে জড়িত থাকলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।