রুটি কিংবা ভাত ছাড়া এ অঞ্চলের মানুষের খাবার গ্রহণই অসম্পূর্ণ থেকে যায়। যদিও ভাত বেশি প্রচলিত। আমাদের প্রতিদিনের খাবার তালিকায় থাকা নানা উপাদেয় খাবার তৈরিতে ভাত ও রুটি- দুটোই ব্যবহৃত হয়।
শরীরের ওজন হ্রাসে অনেকে খাবারের ডায়েটারি কার্বোহাইড্রেট ত্যাগ করার কথা বলেন। কিন্তু ভাত ও রুটি আমাদের খাবার তালিকায় এমনভাবে মিশে আছে যে তা বাদ দেওয়া কঠিন। তবে একটি প্রশ্ন দেখা দেয়, শরীরকে ফিট রাখতে দুই খাবার আইটেমের ভেতর কোনটি বেশি উপযোগী।
রুটি তৈরি হয় গমের আটা থেকে। চাল প্রস্তুত হয় রাইস মিলে ধান থেকে তুষ বা খোসা ছাড়িয়ে তা পালিশ করার মাধ্যমে। অনেকে শরীরে অতিরিক্ত চর্বি জমা হওয়ার অজুহাত দিয়ে ভাত বাদ দেওয়ার কথা বলেন। আবার অনেক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ বলেন, ভাত রুটির চেয়ে হালকা খাবার। এ কারণে ভাতকেই বেছে নেওয়া উচিত।
যাইহোক, সত্যটি হলো উভয় খাবারই শরীরে প্রায় একই ধরনের প্রভাব ফেলে। নিচে উভয়ের কয়েকটি খাদ্য বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করা হলো :
চাল ও রুটিতে রয়েছে একইরকম কার্বোহাইড্রেট এবং ক্যালোরি মান।
চাল ও রুটিতে গ্লাইসেমিক সূচক একই। যার অর্থ হলো এই যে উপকরণ দুটো একইভাবে শরীরের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে।
চাল ও রুটিতে একই পরিমাণ আয়রন বিদ্যমান।
আবার একই ধরনের সাদৃশ্য থাকা সত্ত্বেও ভাত ও রুটিতে পুষ্টিমানে ভিন্নতাও রয়েছে।
ভাতের চেয়ে রুটিতে উচ্চ মাত্রায় ডায়েটারি ফাইবার রয়েছে। তাই এটি দীর্ঘ সময়ের জন্য পেটকে পূর্ণ রাখে।
ভাতে রয়েছে বেশি শ্বেতসার। তাই হজম করা সহজ।
ভাত রুটির চেয়ে উচ্চমাত্রার ফোলেট অর্থাৎ পানিতে দ্রবণীয় ভিটামিন ‘বি’ সরবরাহ করে।
রুটি পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, সোডিয়াম, প্রোটিন এবং ক্যালসিয়ামের মতো বেশিরভাগ খনিজে সমৃদ্ধ।
উভয় আইটেমে বিদ্যমান সকল উপাদান পর্যবেক্ষণ করলে রুটিকে বলা যায় ওজন নিয়ন্ত্রণে বেশি কার্যকর। তবে, ভাতের নানা স্বাস্থ্য সুবিধাও বাতিল করা যায় না। অর্থাৎ দুটোই স্বাস্থ্যকর খাদ্য উপাদানের চাবিকাঠি। সুতরাং, একটির জন্য অন্যটি বাদ দেওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। আপনি ইচ্ছে করলে ভাত ও রুটি দুটোই সীমিত পরিমাণে একসঙ্গে গ্রহণ করতে পারেন।