কিডনি আমাদের শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। বিভিন্ন কারণে কিডনির সমস্যা হতে পারে। তবে কিডনির সমস্যা হলে অনেকে বুঝতে পারেন না। তবে এক্ষেত্রে পর্যাপ্ত পানি পান করা খুবই জরুরি। এছাড়া কিডনির সমস্যা যখন তীব্র আকার ধারণ করে তখন কিডনি প্রতিস্থাপনের প্রয়োজন হয়।
বাংলাদেশে বিভিন্ন রোগে মানুষ মারা যাচ্ছে তার বেশিরভাগ হচ্ছে অসংক্রাণ ব্যধিতে। অনেক কিডনির চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে যান। দেশের অনেক হাসপাতালে স্বল্প মূল্যে কিডনি প্রতিস্থাপন করা যাচ্ছে। তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ)।
কিডনি প্রতিস্থাপন বিষয়ে বেসকারি টেলিভিশনের একটি চিকিৎসা বিষয়ক অনুষ্ঠানে বিএসএমএমইউ রেনাল ট্রান্সপ্ল্যান্ট ইউনিট বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. কার্তিক চন্দ্র ঘোষ এ তথ্য জানান।
ডা. কার্তিক চন্দ্র ঘোষ জানান, দেশে এখন আড়াই লাখ টাকার মধ্যে কিডনি প্রতিস্থাপন করা যায়।বাংলাদেশে ১৯৮২ সাল থেকে সর্ব প্রথম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় কিডনি প্রতিস্থাপন শুরু হয়। সরকারি এই হাসপাতালে স্বল্পমূল্যে কিডনি প্রতিস্থাপন করা যাচ্ছে। এখন ১ লাখ ৬০ হাজার টাকার এই চিকিৎসা করা যায়। এখানে কিডনি আইসিইউ আছে।
তিনি বলেন, ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা হচ্ছে যিনি কিডনি দেবে ও যিনি গ্রহণ করবেন তাদের জন্য একটি প্যাকেজ। এই পাকেজে রয়েছে দুই সপ্তাহের মেডিসিন ও সকল পরীক্ষা নিরীক্ষার খরচ।এছাড়া দুই সপ্তাহের পরেও যদি তার চিকিৎসার প্রয়োজন হয় তবে তাকে থাকতে হবে কিডনি আইসিউইতে এ ক্ষেত্রে কোনো খরচ লাগবে না।
ভারতে এ ধরনের চিকিৎসায় ১২ থেকে ১৩ লাখ টাকা খরচ হচ্ছে তবে আমাদের দেশে কম কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিএসএমএমইউ এত কম খরচে কিডনি প্রতিস্থাপনের কারণ হচ্ছে বিএসএমএমইউ সরকার সহযোগিতা করে।এটি একটি সেবা মূলক প্রতিষ্ঠান। বাংলাদেশের মানুষের সেবা দেওয়াই আমাদের মূল লক্ষ্য। আমাদের কোনো লাভেরর কথা চিন্তা করি না। আমাদের কাছে অর্থ নয় সেবাই প্রথম।
আমাদের শরীরের তলপেটের বিপরীত দিকে ৪ থেকে ৫ ইঞ্চি দৈর্ঘ্যরে মুষ্টি আকৃতির দুটি কিডনি থাকে। কিডনি, হার্ট, ফুসফুস, মস্তিষ্ক, লিভার প্রভৃতি অঙ্গের কাজের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত। কিডনির সব চেয়ে ক্ষুদ্র অংশ হল নেফ্রোন।
প্রতিটি কিডনিতে প্রায় ১০ লাখ নেফ্রোন থাকে যার প্রতিটিই রক্ত পরিশোধনের ক্ষুদ্র ছাঁকুনি হিসেবে কাজ করে। শরীর থেকে অপ্রয়োজনীয় পদার্থ বের করে দেয়া, রক্ত পরিশোধন, পানি ও খনিজ লবণের ভারসাম্য রক্ষা, হরমোন উৎপাদন, এসিড এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ প্রভৃতি কিডনির প্রধান কাজ।
আশ্চর্যজনক হলেও সত্য, কিডনির সর্বোচ্চ শতকরা ৯০ ভাগ সঠিকভাবে কাজ না করলেও একজন মানুষ তেমন বড় কোনো সমস্যা ছাড়াই বেঁচে থাকতে পারে; তবে এ সংখ্যা সবার ক্ষেত্রে একই রকম নাও হতে পারে।
তবে কিডনির সমস্যা যখন তীব্র আকার ধারণ করে তখন প্রতিস্থাপনের প্রয়োজন হয়। কিডনি চিকিৎসা ব্যয়বহুল বলে অনেকে মনে করেন। তবে কিডনির প্রতিস্থানের ক্ষেত্রে খরচ কম হয় এমন অনেক হাসপাতাল আমাদের দেশেই রয়েছে।