বিশ্বব্যাপী প্রায় এক বিলিয়ন জনগোষ্ঠীতে নিকটাত্মীয়ের মধ্যে বিবাহের চল রয়েছে, যেখানে প্রতি তিনটি বিয়ের একটি ঘনিষ্ঠ আত্মীয়ের মধ্যে হয়ে থাকে। বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্য, ইরান ও দক্ষিণ এশিয়ায় নিকটাত্মীয়ের মধ্যে এ ধরনের বিয়ে বেশি ঘটে। এসব বিয়ে শহরের তুলনায় গ্রামাঞ্চলে বেশি হয়, তাতে বাল্যবিবাহের আধিক্যও বেশি।
প্রথম পর্যায়ের বা ফার্স্ট ডিগ্রি রিলেটিভ মানে আপন চাচাতো, মামাতো, খালাতো, ফুফাতো ভাইবোনের মধ্যে বিয়ে। আর দ্বিতীয় বা সেকেন্ড ডিগ্রি রিলেটিভ মানে বাবা বা মায়ের চাচাতো, মামাতো, খালাতো বা ফুফাতো ভাইবোনের সন্তানদের মধ্যে বিয়ে। এই দুই ধরনের কাজিন ম্যারেজের কারণে জন্ম নেওয়া সন্তানের মধ্যে নানা বংশগত রোগের ঝুঁকি বহুলাংশে বৃদ্ধি পায়। বিশেষত জিনবাহিত বংশধারার রোগগুলোর প্রকোপ এতে বাড়ে।
অসুস্থ জিনগুলোর কার্বন কপি যখন মা-বাবা দুই বাহক থেকে সন্তানে বাহিত হয়, তখন তা তীব্র আকারে প্রকাশ পায়। নিকটাত্মীয়ের মধ্যে বিয়ের কারণে সন্তানের যেসব ঝুঁকি বাড়ে তা হলো:
১. গর্ভপাত, মৃত সন্তান প্রসব
২. শারীরিক ত্রুটিসংবলিত শিশুর জন্ম স্বাভাবিকের চেয়ে ৫ গুণ বেশি হয়
৩. প্রথম বছর বয়সে শিশুর অস্বাভাবিক মৃত্যু
৪. হঠাৎ অজানা কারণে শিশুমৃত্যু
৫. যথাযথভাবে শিশু বৃদ্ধি না হওয়া
৬. শ্রবণ ও দৃষ্টিশক্তি ও বুদ্ধি প্রতিবন্ধিতা
৭. মৃগী রোগ
৮. অজানা রোগ
৯. নানা রকমের রক্তরোগ যেমন সিকেল সেল ডিজিজ ও বিটা থ্যালাসেমিয়া।
বাংলাদেশে এমনিতেই থ্যালাসেমিয়া রোগের বাহক বেশি, হিমোগ্লোবিন ই ডিজিজের বাহকও কম নয়। নিকটাত্মীয়ের বিয়েতে এ ধরনের রোগ নিয়ে সন্তান জন্ম নেওয়ার ঝুঁকি অনেকাংশে বেড়ে যায়।
যেসব পরিবারে জন্মগত বিভিন্ন রোগের ইতিহাস আছে, সেখানে আত্মীয় বিয়ের ব্যাপারে খুব সতর্ক থাকা উচিত।