সরকারি মেডিকেল কলেজে ভারতীয় শিক্ষার্থীদের ভর্তি কার্যক্রম স্থগিত করেছে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়। অভিযোগ উঠেছে, দেশটির কিছু শিক্ষার্থী ভর্তির কাগজপত্রে মিথ্যা পরিচয় দিয়েছেন। ঘটনা তদন্ত করছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের চিকিৎসাশিক্ষা দপ্তরের সূত্রগুলো জানিয়েছে, ভারতশাসিত কাশ্মীরের কিছু শিক্ষার্থী পরিচয় গোপন করে অন্য প্রদেশের শিক্ষার্থী হিসেবে বাংলাদেশের মেডিকেল কলেজে ভর্তির চেষ্টা করেছেন, কেউ কেউ ভর্তিও হয়েছেন। গত মাসের মাঝামাঝি ভারতের একটি সংস্থা ভারত ও বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোকে এমন তথ্য জানায়। এরপরই বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ ভর্তি স্থগিত করে এবং তদন্তের সিদ্ধান্ত নেয়।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (চিকিৎসাশিক্ষা) মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার এ বিষয়ে বিস্তারিত বলতে রাজি হননি। তিনি শুধু বলেছেন, ‘বিষয়টির তদন্ত চলছে’। তাঁর সভাপতিত্বে ৭ মার্চ অনুষ্ঠিত সরকারি মেডিকেল কলেজে ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষে এমবিবিএস কোর্সে বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তিসংক্রান্ত সভার কার্যবিবরণীতে বলা হয়েছে, অভিযোগ ওঠা ভারতীয় শিক্ষার্থীদের বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যেন দ্রুত সিদ্ধান্ত জানায়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা গত মঙ্গলবার প্রথম আলোকে বলেন, কিছু ভারতীয় শিক্ষার্থীর ভর্তির কাগজ ঘষামাজা আছে। গুরুত্ব দিয়ে বিষয়টির তদন্ত হচ্ছে। দেড়-দুই সপ্তাহের মধ্যে তদন্ত শেষ হবে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের চিকিৎসাশিক্ষা ও স্বাস্থ্য জনশক্তি উন্নয়ন উপপরিচালকের দপ্তরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, দেশের সরকারি মেডিকেল কলেজগুলোতে সার্কভুক্ত দেশগুলোর জন্য ১০৭টি ও অন্যান্য দেশের জন্য ১০৯টি আসন আছে। অন্যদিকে তিনটি শিক্ষাবর্ষ পার করেছে এমন বেসরকারি মেডিকেল কলেজ অনুমোদিত আসনের ৫০ শতাংশে বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি করাতে পারে। ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল কলেজে দেড় হাজার বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি হন। এর প্রায় ৯০ শতাংশ ভারতীয়। চলতি ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষে অন্যান্য দেশের সঙ্গে ১ হাজার ভারতীয় ও ১০০ নেপালি শিক্ষার্থী আবেদন করেছেন।
বিদেশি শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে আবেদন করেন। সংশ্লিষ্ট দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আবেদন যাচাই–বাছাই করে তা নিজ দেশের বাংলাদেশ দূতাবাসে পাঠায়। বাংলাদেশ দূতাবাস সেই আবেদন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠায়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আবেদনগুলো স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠায়। এরপর অধিদপ্তরে নম্বর সমতাকরণের পর মেধাতালিকা তৈরি হয়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্র বলছে, সরকারি মেডিকেল কলেজে ভারতের শিক্ষার্থীদের জন্য ২২টি আসন বরাদ্দ।