ভেজাল ওষুধ উৎপাদন ও বিক্রির সঙ্গে জড়িতদের মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া উচিত বলে অভিমত দিয়েছেন হাইকোর্ট।
আদালত বলেছেন, কোনো ফার্মেসিতে দ্বিতীয় দফায় ভেজাল ওষুধ পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করা উচিত।
মঙ্গলবার বিচারপতি এফআরএম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কেএম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ অভিমত দিয়েছেন। উল্লেখ্য, বিশেষ ক্ষমতা আইনে অপরাধীদের যাবজ্জীবন এমনকি মৃত্যুদণ্ডের বিধান রয়েছে।
এদিকে ঔষধ প্রশাসন অধিদফতর গত ৩ মাসের কার্যক্রম নিয়ে একটি প্রতিবেদন দাখিল করেছে। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীর পেশ করা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত পহেলা আগস্ট থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত প্রায় ৩৪ কোটি ৮ লাখ টাকার মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ ধ্বংস করা হয়েছে। এ সময় ভ্রাম্যমাণ আদালত প্রায় এক কোটি ৭৫ লাখ টাকা জরিমানা এবং ১৩ হাজার ৫৯৩টি ফার্মেসির বিরুদ্ধে ৫৭২টি মামলা করে। দুটি প্রতিষ্ঠান সিলগালা করে দেয়া হয়েছে।
আদালতে রিট আবেদনকারীর পক্ষে আইনজীবী ছিলেন ব্যারিস্টার এবিএম আলতাফ হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষে আইনজীবী ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার এবিএম আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার কামরুজ্জামান কচি। বাংলাদেশ ঔষধ শিল্প সমিতির পক্ষে ছিলেন অ্যাড. শাহ মঞ্জুরুল হক। আদালত ভেজাল ওষুধের বিষয়ে আদেশের জন্য আগামী ১২ ডিসেম্বর দিন ধার্য করেছেন।
ঢাকার বিভিন্ন ফার্মেসিতে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ নিয়ে ‘ঢাকায় ৯৩ শতাংশ ফার্মেসিতে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ’ শিরোনামে গত ১১ জুন একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে রিট আবেদন করেন ব্যারিস্টার মাহফুজুর রহমান মিলন। এতে সারা দেশে বিভিন্ন ফার্মেসিতে থাকা মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ এক মাসের মধ্যে অপসারণ ও ধ্বংসের জন্য ১৮ জুন নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রি, সংরক্ষণ ও সরবরাহকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়।
স্বাস্থ্য, স্বরাষ্ট্র, আইন, বাণিজ্য ও শিল্প সচিব, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক, ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরের মহাপরিচালক, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের মহাপরিচালক ও উপপরিচালক, পুলিশের মহাপরিদর্শক, বাংলাদেশ ওষুধ শিল্প সমিতির সভাপতি ও মহাসচিবের প্রতি এই নির্দেশ দেয়া হয়। ১৬ জুলাই হাইকোর্টে প্রতিবেদন দেয় ঔষধ প্রশাসন অধিদফতর। এরই ধারাবাহিকতায় আরেকটি প্রতিবেদন দেয় ঔষধ প্রশাসন অধিদফতর।