স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের পরিত্যক্ত মালামাল ধ্বংসের নির্দেশ

দেশের বিভিন্ন সরকারী স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের পরিবেশ উন্নয়নে পরিত্যক্ত, অকেজো ও বাতিল মালামাল নিলামে বিক্রয় এবং ধ্বংসের নির্দেশনা জারি করেছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সিবিএমই শাখার সহকারী সচিব রফিকুল ইসলাম স্বাক্ষরিত চিঠিতে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশের স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোর আনাচে-কানাচে অপ্রয়োজনীয় এবং বাড়তি জিনিসপত্র ফেলে রাখার বিষয়টি অনেকটা স্বাভাবিক নিয়মে পরিণত হয়েছে। আবার প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ব্যবহার না করে ফেলার রাখার অভিযোগ দীর্ঘদিনের। দেশের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের প্রতিষ্ঠানগুলোর অবকাঠামো যথেষ্ট মজবুত। শৌখিন নক্সা সম্বলিত প্রতিটি অবকাঠামো তৈরি করতে দেয়া হয় বিশাল অঙ্কের বরাদ্দ।

কিন্তু চালু হওয়ার কয়েক বছর পরই প্রতিষ্ঠানগুলো হয়ে পড়ে অস্বাস্থ্যকর ও নোংরা। এসব কিছুর জন্য হাসপাতালে আগত রোগী এবং তাদের অভিভাবকদের অভিযুক্ত করেই পার পেয়ে যায় স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলো। রোগী ওয়ার্ডের আনাচে-কানাচেই ফেলে রাখা হয় পরিত্যক্ত চেয়ার, টেবিল ও রোগী শয্যা। একই অবহেলার শিকার হয় প্রতিষ্ঠানসমূহের বারান্দাগুলো।

এতে স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোর সৌন্দর্য নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি হয়ে ওঠে অস্বাস্থ্যকর। বিষয়টি তদন্ত শুরু করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করেন তদন্ত কমিটি ও উপ-কমিটির সদস্যরা। তাদের পরিদর্শনে বেরিয়ে আসে স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোর এমন চিত্র। তার প্রেক্ষিতেই প্রতিষ্ঠানসমূহকে চিঠি দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়।

চিঠিতে বলা হয়, বিভিন্ন স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে যত্রতত্র নথি, পুরাতন চেয়ার, টেবিল, আলমারি, গাড়ি, মেডিক্যাল যন্ত্রপাতি ও অন্যান্য মালামাল, অকেজো বা ব্যবহার অযোগ্য অবস্থায় পড়ে আছে। এ সকল অকেজো মালামাল স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের সৌন্দর্য ও পরিবেশ নষ্ট করছে। এছাড়া এ সকল দ্রব্যাদির কারণে স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের রোগ জীবাণু মুক্ত ও পরিচ্ছন্ন পরিবেশের জন্য হুমকি সৃষ্টি করে। পরিবেশ অপরিচ্ছন্ন হলে সরকারের স্বাস্থ্যসেবা কর্মসূচীর ওপর জনগণের আস্থা হ্রাস পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। সর্বোপরি ব্যবহার অযোগ্য দ্রব্য দীর্ঘ সময় পড়ে থাকলে দ্রব্যের পুনর্বিক্রয় মূল্য কমে যায় ফলে সরকারও আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় ।

চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের পরিবেশ ও পরিচ্ছন্নতা উন্নয়নে উল্লেখিত সমস্যাবলী থেকে উত্তরণের লক্ষ্যে সরকারী বিধি মোতাবেক অকেজো, অনুপযোগী বা ব্যবহার অযোগ্য মালামাল নিলামের মাধ্যমে বিক্রয় বা বিনষ্ট করার পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরী।

উল্লেখিত কার্যক্রমটি বাস্তবায়ন সহজীকরণের লক্ষ্যে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ কর্তৃক হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে ব্যবহারের জন্য ‘কনডেমনেশন গাইড লাইন’ প্রস্তুত করে মাঠ পর্যায়ের সকল প্রতিষ্ঠানে প্রেরণ করা হয়েছে যা স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের ওয়েবসাইটে আছে। এমতাবস্থায় বিশেষায়িত/জেলা/উপজেলা পর্যায়ের সকল হাসপাতাল ও অন্যান্য স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে অযোগ্য/অকেজো/অনুপযোগী মালামাল সরকারী বিধি মোতাবেক নিলামে বিক্রয় বা বিনষ্ট/ধ্বংস করার হাসপাতালের সার্বিক পরিবেশ উন্নয়নে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো বলে মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে বলা হয়েছে।

About Post Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *